‘নিরাপদ সড়ক চাই, বিপদ থেকে রক্ষা পাই’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে আজ ২২ই মে রাজ সোমবার সকাল ১১টায় লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে বাংলাদেশ রোড টান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) লক্ষ্মীপুর সার্কেল এর আয়োজনে কলেজ শিক্ষার্থীদের নিয়ে নিরাপত্তা সড়ক সংক্রান্ত সচেতনতামূলক সভা-২০১৭ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক হোমায়রা বেগম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শেখ মুর্শিদুল ইসলাম। কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মাইন উদ্দিন পাঠানের সভাপতিত্বে, শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ভুঁইয়া তপনের সঞ্চালনায় কিভাবে নিরাপদ সড়ক উপহার দেওয়া যায় সে বিষয়ে ভিডিও ফুটেজ প্রদর্শনসহ স্বাগত বক্তব্য দেন সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার) বিআরটিএ প্রকৌশলী আবদুর রশীদ।
এ সময় নিরাপদ সড়ক নিয়ে প্রশ্ন-উত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয় এবং তিনি প্রশ্নগুলোর উত্তর দেন। ১ম প্রশ্নটি করেন দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া ও সংবাদকর্মী জুনাইদ আল হাবিব। প্রশ্নকর্তাঃ প্রাণঘাতি লেগুনা কেড়ে নিচ্ছে বহু প্রাণ, ঠিক এভাবেই থেমে যাচ্ছে অসংখ্য শিক্ষার্থীর জীবন! লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের লেগুনার বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণ ও জেলার প্রাণকেন্দ্র ঝুমুর, উত্তর তেহমুনী, সামাদ মোড় ও দক্ষিণ তেহমুনীতে নিরাপদ ভাবে রাস্তা পারাপার করার জন্য কি কোন ফুট ওভার ব্রীজ নির্মাণ করা যায় কি?
উত্তরদাতাঃ ফুট ওভার ব্রীজ নির্মাণের বিষয়ে কিছু দিনের মধ্যে একটি পরামর্শ সভা করা হবে।
২য় প্রশ্নকর্তা অর্নাসের শিক্ষার্থী আশরাফুল মোবারক।
প্রশ্নকর্তাঃ সড়কের বেপরোয়া চালকদের সচেতনতা কিভাবে বাড়ানো হচ্ছে?
উত্তরদাতাঃ তাদের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে মিটিং এর মাধ্যমে আমরা সচেতন করার চেষ্টা করি।
৩য় প্রশ্নটি অর্নাসের পড়ুয়া অন্তী কর্মকার।
প্রশ্নকর্তাঃ আমরা বিভিন্ন সময়ে যানবাহনে হাফ ভাড়া নিয়ে স্টাফদের সাথে বিতর্কে জড়াতে হয়। এক্ষেত্রে করণীয় কি?
উত্তরদাতাঃ কোন শিক্ষার্থী কোনভাবে যানবাহনে হেনস্থা হলে আমাদের অবহিত করলে আমরা অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
৪র্থ প্রশ্নটি করেন কলেজের ডিগ্রী শিক্ষার্থী ও ছাত্রনেতা মোঃ মাইন উদ্দিন মাইন।
প্রশ্নকর্তাঃ অবৈধ ও ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলোর বিরুদ্ধে আদৌ কিভাবে অভিযান চালানো হচ্ছে?
উত্তরদাতাঃ মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আমরা আগে অভিযান পরিচালনা করতাম। তবে এখন তা হাইকোর্টের নির্দেশে ভিন্নভাবে অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা হচ্ছে। ৫ম প্রশ্নটি করেন কলেজের আরেক শিক্ষার্থী হিমেল রহমান।
প্রশ্নকর্তাঃ বেপরোয়া চালকরা কি যোগ্যতার ভিত্তিতে লাইসেন্স পায় নাকি ঘুষের বিনিময়?
উত্তরদাতাঃ চালকদের যখন গাড়ি চালানোর উপযুক্ত মনে করা হয় এবং যাচাই-বাচাইয়ের মাধ্যমে আমরা তাদের লাইসেন্স দিয়ে থাকি।
৬ষ্ট প্রশ্নটি করেন দ্বাদশের ছাত্রী রত্মা পাল।
প্রশ্নকর্তাঃ মেয়েরা কি ১৮বছরের আগে ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে পারবে?
উত্তরদাতাঃ না। অবশ্যই তাকে যোগ্যতা অর্জন করে প্রাপ্ত বয়স্ক হতে হবে।
এছাড়াও প্রশ্ন করেছিলেন কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, সংবাদকর্মী সাইফুল ইসলাম সার্জেন্ট প্রমুখ।
এরপর অনুষ্ঠানের সঞ্চালক সাইফুল ইসলাম ভুঁইয়া (তপন) শিক্ষার্থীদের পক্ষে জেলা প্রশাসককে অবিহত করে বরেল, কয়েক দিনের বিদ্যুৎ ও পানি সংকটে জীবন এখন বিপন্ন হয়ে পড়ছে। পাশাপাশি কলেজ পথের সড়কটার বেহাল অবস্থায় আমরা খুবই ভোগান্তির সম্মুক্ষীণ হতে হয়।
এসময় প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক হোমায়রা বেগম বলেন, লক্ষ্মীপুরের সৃষ্ট সমস্যা ক্রমান্বয়ে সমাধানের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। যার মধ্যে, অতিরিক্ত গরমে বিদ্যুৎ ও পানি সংকট, ফুট ওভার ব্রীজ, নির্মানাধীন চক বাজারস্থ সেতু ও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে পড়া বিষয়গুলো সমাধান করার চেষ্টা থাকবে।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মাইন উদ্দিন পাঠান বলেন, আমার শিক্ষার্থীদের মাঝ থেকে আসা নিরাপদ সড়ক বিষয়ক চমৎকার প্রশ্নগুলো আমাদের এড়িয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নাই। যে সব ড্রাইভারদের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে তাদের দক্ষতার পরিচয় তারা কি ঘটাতে পারছে? তারা কি দুর্ঘটনা মোকাবেলায় সচেতন? তারা কি নিয়ম মোতাবেক গাড়ি চালাচ্ছে?
এ বিষয়গুলো অত্যন্ত সুক্ষ্মভাবে বিবেচনায় নিয়ে নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নে অভিযান চালাতে হবে।
এ ছাড়াও সভাতে উপস্থিত ছিলেন কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ ও কলেজের বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ।
পাঠকের মন্তব্য