মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা সুনামগঞ্জের কৃতি সন্তান। জন্মেছেন প্রান্তিকের পশচাৎপদ জনপদে। বেড়ে উঠেছেন কাঁদামাটিতে। প্রান্তিকের মানুষের প্রতি উদার মন-মানষিকতা তাকে সাফল্যের স্বর্ণ শিখরে উঠতে সাহায্য করেছে। দেশে পড়ালেখা শেষ করে, বিদেশ থেকে লাভ করেছেন উচ্চতর ডিগ্রী। কর্মজীবনে বেশ কয়েক বছর অধ্যাপনা করেছেন কলেজে। এরপর এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কর্মকর্তা।
জেলা প্রশাসক হিসেবে লক্ষ্মীপুরে যোগদান করেছেন ১লা জুলাই ২০১৫ সালে। লক্ষ্মীপুরে যোগ দেওয়ার পর শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার মানোন্নয়নে দৈনন্দিন কার্যক্রমের রুটিন তৈরি করে ডিজিটাল পোষ্টার আকারে জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে দেন, সন্ত্রাস ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছেন, ছিন্নমূল শিশুদের জন্য রায়পুর ফেন্ডস ফোরামের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করেছেন “বাতিঘর স্কুল”, গরীব-অসহায় মানুষদের রোগ ভোগান্তি নিরসনে প্রতিষ্ঠা করেছেন “রোগী কল্যাণ তহবিলের” মতো সামাজিক উন্নয়ন সংগঠন। তিনি নিজকে কাজের মাধ্যমে আলাদা করে নিয়েছেন অন্য জেলা প্রশাসকের চেয়ে। যার চোখ থাকতো প্রান্তিকের দিকে। যার এক জ্বলন্ত উদাহরণ মেঘনাতীরের মজু চৌধুরীর হাটে ঘুরতে গিয়ে ছিন্নমূল শিশুদের সঙ্গে সেলফি তুলে, চকলেট খেয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অনেক আনন্দ করে ছিলেন। যার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে জেলাব্যাপী এক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
ছোট বেলায় অবশ্য তরুণ লেখক সিলেট ক্যাডেট মাদ্রাসার বাংলা প্রভাষক, তরুণ লেখক ও মামা আহমদ হোসাইনের একটি কবিতা পড়েছি। যেখানে তিনি লিখেছেন, সুনামগঞ্জের সুনাম আছে অনেক অনেক বেশি, তা শুনে আনন্দ পায় হবিগঞ্জবাসী। আসলে তাই, সুনামগঞ্জের সুনামের পেছনে জেলা প্রশাসক মোঃ জিল্লুর রহমানের মতো কৃতি সন্তানরাই একমাত্র দাবি রাখতে পারে। টানা ২বছরের কাছাকাছি সময়ে লক্ষ্মীপুরে কর্মক্ষেত্রে থাকা অবস্থা নিজ আদর্শের ছোঁয়ায় তৈরি করে নিয়েছেন অসংখ্য ভক্ত। তিনি শিশুদের দেখলে শিশুর মতো হয়ে যান, যার প্রমাণ আমি নিজেই।
জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে প্রশাসনিক কর্মক্ষেত্র পরিবর্তনের। এ বছরের মে মাসেই বদলি হয়ে যোগ দিবেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক হিসেবে। এমন খবর শুনে জেলার মানুষ দিশেহারা পড়ছে, মানুষ যেন একজন সফল ডিসিকে হারাচ্ছে। কেউ কেউ চোখের জল থামিয়ে রাখতে পারছেন না। অনেক মানুষ যেন একজন সফল জেলা প্রশাসক মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরীকে হারানোর বেদনায় নিজকে মানিয়ে রাখতে পারছেন না। তিনি ছিলেন অসংখ্য তরুণের অভিভাবক। যার প্রমাণ মিলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের স্ট্যাটাসগুলো।
শুভ কামনা ও দোয়া রইলো স্যার আপনার জন্য আলোকযাত্রা লক্ষ্মীপুর দলের পক্ষ থেকে। সুস্থ্য জীবনে সুখে কাটুক স্যার আপনার সারাটি জীবন। উপকূলের প্রান্তিকের মানুষের সমস্যা নিরসনে আপনার নিরলস প্রচেষ্টা থাকুক অব্যাহত এমনি কামনা করি প্রতিক্ষণ।
পাঠকের মন্তব্য