শিক্ষা ব্যবস্থায় মৌলবাদি অগ্রাসন ও হেফাজতের সাথে সরকারের আপসকামিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের বিপরীত চেতনায় হাঁটছে বলে দাবি করেন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি নারী সেল ও সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) সকাল ১১টায়, শিক্ষাব্যবস্থা ও বাংলাদেশের ঐতিহ্য-সংস্কৃতির উপর মৌলবাদী আক্রমণ, অপপ্রচার ও ধর্মান্ধদের সাথে সরকারের আপসের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি নারী সেল ও সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ ্এ দাবি করেন বক্তারা।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি কেন্দ্রীয় নারী সেলের আহ্বায়ক ও সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য লক্ষ্মী চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে এবং সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী শম্পা বসুর পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শিক্ষাবিদ এ এন রাশেদা, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি কেন্দ্রীয় নারী সেলের নেত্রী অ্যাড. মাকসুদা আক্তার লাইলী, লুনা নূর, তাহমিনা ইয়াসমিন নীলা, শাহানারা বেগম, এবং সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টাম-লীর সদস্য সামসুন্নাহার জোৎস্না, কিশোর ওয়াসেফা এথিনা, রুখসানা আফরোজ আশা প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তাগণ বলেন, এই সরকার নিজেদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী বলে জাহির করে অথচ একের পর এক মৌলবাদীদের সাথে আপস রফার ব্যবস্থা করছে। এবছরের শুরুতেই হেফাজতে ইসলামের দাবি মেনে পাঠ্যপুস্তক থেকে প্রগতিশীল-অসাম্প্রদায়িক লেখক ও লেখাকে বাদ দেওয়া হয়েছে, কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ স্তর দাওরা-ই-হাদিসকেমাস্টার্সের সমমান বলে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন এবং হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সামনে অবস্থিত জাস্টিসিয়া ভাস্কর্যের অপসারণ দাবি করেছে। প্রধানমন্ত্রী তাতে সায় দিয়েছেন। এর আগে হেফাজতে ইসলামের আমির শফি সাহেব মেয়েদেরকে তেতুলের সাথে তুলনা করেছিল আর এবার নারী নেতৃত্বের প্রতীক জাস্টিসিয়া ভাস্কর্যের অপসারণ দাবি করছে। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য তার নিজের অবস্থানকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।
বক্তাগণ আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান ছিল ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার; সংবিধানের চার মূলনীতির একটি অসাম্প্রদায়িকতা। পাকিস্তানী শাসকেরা যেভাবে ধর্মকে ব্যবহার করে আমাদেরকে শোষণ নিপীড়ন করেছিল ঠিক একইভাবে যেন মুক্তিযুদ্ধের ৪৬ বছর পরও আমাদের দেশের শাসকগোষ্ঠী তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য ধর্মকে ব্যবহার করছে। শিক্ষাব্যবস্থা বাংলাদেশের ঐতিহ্য সংস্কৃতির উপর যেভাবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় মৌলবাদী আক্রমণ চলছে তাতে মনে হচ্ছে বাংলাদেশ যেন মুক্তিযুদ্ধের বিপরীত চেতনায় হাঁটছে।
সমাবেশ থেকে বক্তাগণ দেশের নারী-তরুণ-যুবক-প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল ও বুদ্ধিজীবীদের প্রতি দেশকে মৌলবাদীদের থাবা থেকে বাঁচাবার জন্য ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের আহ্বান জানান।
পাঠকের মন্তব্য