সিলেটের ‘আতিয়া মহল’ প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান

সিলেট মহানগরের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকায় সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানা ‘আতিয়া মহল’ প্রাঙ্গণে ঢুকেছে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান। নিচতলার কাছাকাছি কয়েকজন সেনাসদস্যকে দেখা গেছে। সেখানেই জঙ্গিরা অবস্থান করছেন বলে পুলিশ গতকাল তাঁদের সন্দেহের কথা জানান।

আটকে পড়া বাসিন্দাদের উদ্ধারকাজ শেষ বলে বেলা সোয়া একটার দিকে জানিয়েছেন, জালালাবাদ সেনানিবাসের ইনটেলিজেন্স উইংয়ের এক কর্মকর্তা।

বেলা সোয়া ১১টার দিকে দায়িত্ব পালনরত পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, সেনাবাহিনীর কমান্ডো দল আতিয়া মহল নামের ওই বাড়ির বাসিন্দাদের বের করে আনছে। আতিয়া মহল ও তার পাশের আতিয়া মহল ২ নামের আরেকটি ভবনের মাঝখানে ফায়ার সার্ভিসের মই দিয়ে সেতু তৈরি করা হয়েছে। এই পথে সেনাবাহিনীর সহায়তায় বাসিন্দাদের বের করা হচ্ছে। সে সময় ফায়ার সার্ভিসকে বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকতে দেখা গেছে।

সকাল ১০টা ৫ মিনিটের দিকে পরপর দুটি গুলির শব্দ শোনা গেছে। এরপর আর কোনো শব্দ শোনা যায়নি। এলাকার বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।

জালালাবাদ সেনানিবাসের ইনটেলিজেন্স উইংয়ের কর্মকর্তা সকাল সাড়ে নয়টার একটু পরই সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ নামে অভিযান শুরুর কথা জানিয়েছিলেন। সে সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ নামে এই অভিযান সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে হচ্ছে। পুলিশ ও সোয়াট সহায়তা করছে। সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা মূল অভিযান চালাচ্ছেন। ১৭ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল আনোয়ারুল মোমেন অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

অভিযান শুরু হওুয়ার পরই ওই এলাকায় ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় ওই এলাকা কিছুটা অন্ধকার হয়ে যায়। সে সময় সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্যকে সন্দেহজনক জঙ্গি আস্তানা ‘আতিয়া মহলে’ ঢোকার জন্য আশপাশের বাড়িতে টর্চলাইট খুঁজতে দেখা যায়। বেলা সাড়ে ১১টার পর বৃষ্টি থেমে যায়।

সকাল আটটার দিকে ঘটনাস্থলে অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ফোর্স।

ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, পুলিশের সাঁজোয়া যান ও কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে।

গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় চালানো অভিযানেও অংশ নিয়েছিল সিলেটের জালালাবাদ থেকে যাওয়া সেনাবাহিনীর কমান্ডো দল।

জঙ্গিরা অবস্থান করছে-এমন তথ্যের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে পাঁচতলা বাড়িটি ঘেরাও করে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দিনভর বারবার মাইকে আহ্বান জানিয়েও ভেতরে থাকা জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করাতে পারেনি পুলিশ। উল্টো ভেতর থেকে গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। অভিযান চালাতে ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াটের একটি দল গতকাল বিকেলে সিলেটে পৌঁছায়। রাতভর বাড়িটি ঘিরে রাখা হয়। গতকাল সন্ধ্যার পর সেনাবাহিনীর দুটি গাড়ি ঘটনাস্থলে যায়।

পুলিশের ধারণা, আতিয়া মহল নামের বাড়িটির নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা অবস্থান করছে। ভেতরে একজন নারী থাকার কথা নিশ্চিত হলেও মোট কতজন আছে, সেটা জানা যায়নি। পুলিশের ধারণা, ভেতরে নব্য জেএমবির গুরুত্বপূর্ণ নেতা মাইনুল ওরফে মুসা রয়েছেন।

আতিয়া মহল নামের পাঁচতলা ওই বাড়িতে মোট ২৯টি ফ্ল্যাট রয়েছে।

সর্বশেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৭, ১৩:৫৭
প্রথম আলো

পাঠকের মন্তব্য

সর্বশেষ আপডেট


বিনোদন