জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের ঘটনার তথ্য অনুসন্ধানে সেখানে একটি তদন্ত দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনির নির্যাতনের কারণে এ পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
কিন্তু রাখাইন প্রদেশে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তে এ পর্যন্ত সেখানে কোন স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত দলকে ঢুকতে দেয়নি মিয়ানমার।
জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে এই প্রস্তাবটি পাশ হওয়ার পর মিয়ানমার সরকার এর প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, এটি তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
রাখাইন রাজ্যে কী ঘটছে তা সরেজমিনে তদন্ত করে দেখার সব আন্তর্জাতিক চেষ্টায় মিয়ানমারের সরকার এ পর্যন্ত বাধা দিয়ে এসেছে।
কিন্তু এবার যদি মিয়ানমারের সরকারকে সেই কাজ করতে হয় তাহলে তাদেরকে জাতিসংঘের এই প্রস্তাবকে অমান্য করতে হবে। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে এই প্রস্তাবের উত্থাপক ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এটি পাশ হয়েছে সবার সম্মতির ভিত্তিতে। তবে ভারত, চীন আর কিউবা এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট না দিলেও এর সঙ্গে ছিল না।
জাতিসংঘের এই প্রস্তাবের মাধ্যমে এখন একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত মিশন গঠিত হবে, যাদের কাজ হবে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে দেখা, সেখানে কী ঘটেছে।
মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যাপক সহিংসতা এবং নারীদের ওপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
এসব অভিযোগ তদন্ত করে দেখার জন্য তদন্ত দলে বিশেষজ্ঞ থাকবে।
কিন্তু জাতিসংঘের এই তদন্ত দলকে মিয়ানমার সেদেশে আদৌ ঢুকতে দেবে কীনা তা নিয়ে সংশয় আছে।
এটি অনেকখানি নির্ভর করবে দেশটির নেত্রী অং সান সু চির ওপর। হয় তাকে মিয়ানমারের জেনারেলদের বিরাগভাজন হয়ে জাতিসংঘ দলকে ঢোকার অনুমতি দিতে হবে, নয়তো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ইচ্ছের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।
জাতিসংঘে প্রস্তাবটি পাশ হওয়ার পর মিস সু চি এখন প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়েছেন।
বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, মিয়ানমার শেষ পর্যন্ত জাতিসংঘ দলকে সেখানে ঢুকতে বাধা দিতে পারে এমন সম্ভাবনাই প্রবল।
পাঠকের মন্তব্য