দেশে বৈষম্য ও লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছে ট্রান্সজেন্ডার মানুষেরা। তাদের অধিকার সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে আইন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ‘ট্রান্সজেন্ডার অধিকার সুরক্ষা আইন’ নামের আইনটি পাস হলে বৈষম্য থেকে অনেকটাই মুক্তি মিলবে ট্রান্সজেন্ডারদের।
বৃহস্পতিবার এমন তথ্য জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উপপরিচালক এম রবিউল ইসলাম। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতিতে ট্রান্সজেন্ডার গোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা, খাদ্যসংকট, বৈষম্য নিরসনে করণীয় শীর্ষক এক সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা জানান।
উপপরিচালক এম রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ট্রান্সজেন্ডার জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিতের জন্য ট্রান্সজেন্ডার অধিকার সুরক্ষা আইনের খসড়া তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ জন্য এই জনগোষ্ঠী ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আগামী মাসে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে সবার মতামত নিয়ে একটি আইন তৈরি করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর এটি সংসদে উপস্থাপন হবে। তারপর বাস্তবায়ন করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আইনটি বাস্তবায়িত হলে এই কমিউনিটির মানুষগুলো আর সেবা নিতে বৈষম্যের শিকার হবে না। বিদেশ যেতে পাসপোর্ট নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না। জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে জটিলতার নিরসন হবে। আইন দ্বারা তাদের অধিকার নিশ্চিত হবে।’
অনুষ্ঠানে ‘সম্পর্কের নয়া সেতু’ সংগঠনের সভাপতি জয়া সিকদার বলেন, ‘মহামারিতে সৃষ্ট সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সরকারিভাবে দুর্যোগকালীন জনগোষ্ঠীর জন্য তহবিল গঠন করতে হবে। এর মাধ্যমে লিঙ্গবৈচিত্র্যয়ম জনগোষ্ঠী ও সংগঠনগুলো তালিকাভুক্ত করে সরকারি সুযোগ-সুবিধা সব সদস্যের জন্য নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্রে সব জটিলতা দূর করতে হবে। সবার জন্য বৈষম্যহীন নীতি চালু করতে হবে। সরকারি হাসপাতালে ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আলাদাভাবে সেবা নিশ্চিতের ব্যবস্থা রাখতে হবে।’
ঢাকা জেলা সিভিল সার্জনের মেডিক্যাল অফিসার ফারহানা কবীর বলেন, ‘করোনা টিকা নিতে ট্রান্সজেন্ডার জনগোষ্ঠীর নিবন্ধন জটিলতা দূর করতে সুরক্ষা অ্যাপে নারী-পুরুষের পাশাপাশি অন্য নামে কোনো কর্নার খোলার বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে কথা বলা হবে। এ ছাড়া টিকা নেওয়ার জন্য নারী-পুরুষের মতো আলাদা কোনো সারি করা যায় কি না এ বিষয়েও আলোচনা করা হবে।’
সংলাপে নারী পক্ষ, সচেতন হিজড়া অধিকার সংঘ, সুস্থ জীবন, পদ্মকুঁড়ি হিজড়া সংঘ, আলোকিত শিশুসহ বেশকিছু সংগঠনের প্রতিনিধি এতে অংশ নেন।
পাঠকের মন্তব্য