রিয়াজুল হাসান রিয়াদ: একুশে ফেব্রুয়ারি এদেশের লড়াই সংগ্রামের উন্মেষ ঘটিয়েছিল। জাতীয় জীবনের একটা ইতিহাস। এদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের বীজ সূচিত হয়েছিল ভাষা সৈনিকদের আত্মদানের মাধ্যমে। জাতী হিসেবে কি আমরা তাদের স্মরন করব না?
দীর্ঘদিন ধরে শহিদ দিবস পালনের ধরন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। দিবসটাকে ইসলামিকীকরন করার কথাও বলা হচ্ছে।
যেমন : মিলাদ, মোনাজাত, আত্মার মাগফিরাত কামনা, দান-সদকা, দোয়া - মাহফিল ইত্যাদি।
এখন প্রশ্ন হল ভাষা আন্দোলন কি? এবং কেন হয়েছিল?
৭% উর্দু ও ৫৬% বাংলা ভাষা ভাষী মানুষ ছিল পাকিস্তানে। তারপরও উর্দু চাপিয়ে দিতে ছেয়েছিল ধর্মের নাম করে। বলা হয়েছিল উর্দু দেখতে আরবির মত। উর্দু মুসলিমদের ভাষা। তাই পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা হবে উর্দু। বুঝায় যাচ্ছে যে ধর্মীয় একটা ভাবমানসের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যেতে হয়েছিল সেদিনকার আন্দোলনকারীদেরকে। সে আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ‘৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগের শোচনীয় পরাজয় হল। এই প্রক্রিয়ায় জাতীয় চেতনায় যুক্ত হল ধর্মনিরপেক্ষতা। তাহলে একটা অসাম্প্রদায়িক আন্দোলনকে আমরা কেন সাম্প্রদায়িক করব?
এখন প্রশ্ন হল জাতীয় দিবস গুলো পালন করতে গিয়ে যে পরিমান ব্যয় করা হয় তা কতটুকু যৌক্তিক ? আর এসব দিবস ভিত্তিক যে অনুন্ঠান করা হয়, তা জাতীয় চেতনা কতটুকু লালন করে? তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়। কিন্তু দিবস গুলো পালনের ফুলের টাকা দিয়ে দরিদ্রের দারিদ্র; দু:খীর দু:খ ; অভাবীর অভাব ; বস্ত্রহীনের বস্ত্রহীনতা ; গৃহহীনের গৃহহীনতা ; ছিহ্নমূলের ছিহ্নমূলতা দূর করার কথা বলা কতটুকু যুক্তিযুক্ত?
রাষ্ট্রীয় অপব্যয় , দূর্নীতি, লুটপাট, অর্থ-আত্মসাৎ , তথাকথিত প্রশিক্ষণ আর অভিজ্ঞতা অর্জনেরর নামে আমলাদের বিদেশ ভ্রমণ করে অর্থ তছরুপ এগুলোর সাথে মেলানো হয়না বললেই চলে।
কেবল জাতীয় দিবস আসলে এই জাতীয় নিউজ ভেসে আসে বিভিন্ন মাধ্যমে আর কিছু মানুষের আলোচনায়।
বলা হয় না ভাষা আন্দোলন আমাদের দেশীয় সংস্কৃতিকে সমুন্নত রাখতে ভূমিকা রেখেছিল। দেশের ভাষা সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করতে হবে। আকাশ সংস্কৃতিকে ত্যাগ করতে হবে।
বলা হয় না স্বাধীনতা আন্দোলন শুধু আমাদের ভূখণ্ড পাওয়ার লড়াই ছিলনা। ছিল সবার জন্য খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা পাওয়ার লড়াই।
যদি তা বলা হত তবে স্বাধীনতার ৪০ বছরে এসে আমাদের এই ছবি দেখতে হত না।
*প্রভাষক, সমাজবিজ্ঞান
পাঠকের মন্তব্য