নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ-এ দ্বাদশ ব্যাচের নবীনবরণ

নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ-এ দ্বাদশ ব্যাচের নবীনবরণ।
নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ-এ দ্বাদশ ব্যাচের নবীনবরণ।

নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ (এনডিইউবি)-এর ক্যাম্পাসে ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ শনিবার সকাল ৯ ঘটিকায় দ্বাদশ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উপাচার্য ফাদার প্যাট্রিক ড্যানিয়ের গ্যাফনি, সিএসসি-র সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দ্যা ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক জনাব মাহফুজ আনাম। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ফাদার জে, এস, পিশোটো, সিএসসি, রেজিস্ট্রার ফাদার আদম এস, পেরেরা, সিএসসি, প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ, শিক্ষকম-লী এবং দ্বাদশ ব্যাচের নবীন শিক্ষার্থীবৃন্দ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন প্রধান অতিথি, উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার মহোদয়। এরপর অতিথিবৃন্দ ও নবাগত শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করেন নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ। শিক্ষার্থীরা এনডিইউবি থিম সং পরিবেশন করেন।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে উপাচার্য ফাদার গ্যাফনি, নবীন শিক্ষার্থীদেরকে নটর ডেম পরিবারে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্জিত শিক্ষা বিষয়ে আলাপ-আলোচনা পূর্বক শিক্ষার্থীদের নিজেদের জ্ঞানভা-ারকে সমৃদ্ধ করা প্রয়োজন। একজন শিক্ষার্থী কাক্সিক্ষত পর্যায়ে দক্ষতা অর্জন না করলে পরবর্তী সময়ে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়। এ জন্য তিনি নবাগত শিক্ষার্থীদেরকে মূল্যবোধসম্পন্ন শিক্ষা গ্রহণ ও দক্ষ মানুষ হওয়ারও আহ্বান জানান।

রেজিস্ট্রার ফাদার আদম এস, পেরেরা, সিএসসি বিভাগভিত্তিক শিক্ষকম-লী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও নবাগত শিক্ষার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন।

ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষক এস, এম ফিরোজ মাহমুদ শিক্ষার্থীদেরকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন যে, “নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ে আগমন তোমাদের জীবনে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। পূর্বে তোমাদের জীবনযাত্রায় অন্যান্যদের ভূমিকা যথেষ্ট পরিমাণে ছিল; কিন্তু এখন থেকে তোমার জীবন গঠনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা তোমার হাতেই ন্যস্ত হয়েছে। এটি যেমন উত্তেজনাকর তেমনি চ্যালেঞ্জে পরিপূর্ণ। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তুমি নতুন অনেক কিছু শিখবে, তোমার দক্ষতা বাড়বে এবং ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য তুমি প্রস্তুত হবে। নিরন্তর সাধনা ও পঠন-পাঠনের মাধ্যমে বিকশিত হোক তোমাদের মেধা ও মননশীলতার এটিই আমাদের প্রত্যাশা।”

অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মুশাইদুর রহমান রাব্বী (বিবিএ) নিজের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করে বলেন যে, এ ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আজ নতুন প্রাণের স্পর্শে স্পন্দিত ও আনন্দে মুখরিত। আমাদের এ প্রতিষ্ঠানটি নানা দিক থেকে গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্যের অধিকারী। এক মহান ব্রত ধারণ করে আছে এ পবিত্র বিদ্যাপীঠ। যার স্লোগান হচ্ছে ‘দেখায় পারদর্শীতা ও কর্মে সৎ সাহস।’ আজ থেকে তোমাদের জন্য এটাই হোক জীবনের মূলমন্ত্র। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ যেমন কম্পিউটার ল্যাব, লাইব্রেরি, কাউন্সেলিং, প্রশাসনিক সহযোগিতা এবং শিক্ষকবৃন্দের শিক্ষাদান পদ্ধতি সব কিছুই উন্নতমানের। এখানে আরও রয়েছে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ এবং সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার সুযোগ। রাব্বী উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে বেছে নেওয়ার জন্য নবাগতদের প্রতি অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন। আলোকিত জীবনের জন্য তোমাদের সে অভিযাত্রা শুভ হোক, সুন্দর হোক।

নবাগত শিক্ষার্থী শ্রাবণী আহমেদ (ইংরেজি) অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন যে, বিশ্ব দরবারে নটর ডেম একটি সুপরিচিত নাম। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেওে তিনি গর্বিত। নটর ডেম-এর বিজ্ঞ শিক্ষকম-লীর নিকট থেকে সুশিক্ষা গ্রহণ কওে তিনি এবং তার সহপাঠীরা সমাজ ও জাতি গঠনে ভূমিকা রাখতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক জনাব মাহফুজ আনাম শিক্ষার্থীদেরকে বলেন, “আমি নটর ডেম কলেজে ১৯৬৫-৬৭ শিক্ষাবর্ষে অধ্যয়ন করেছিলাম। আজ নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ-এর দ্বাদশ ব্যাচের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হতে পেরে আমি গর্বিত ও সম্মানিত বোধ করছি। এখান থেকে তোমরা মূল্যবোধভিত্তিক ও মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ পাবে। জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সময়ের সদ্ব্যবহার। তোমরা অবশ্যই সময়কে কাজে লাগানোর বিষয়ে সচেতন থাকবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের জীবনের সকল পর্যায়ে সহনশীলতা প্রদর্শন করা প্রয়োজন। আমি একজন মুসলমান হিসেবে আমার ধর্মকে নিয়ে যেমন গর্ব অনুভব করি, তেমনি আমার মনে রাখতে হবে, অন্যান্য ধর্মের অনুসারীণেরও একই অনুভূতি আছে এবং তারাও যেন নিজ নিজ ধর্ম নিয়ে গর্ব অনুভব করার সুযোগ পান। আমরা প্রত্যেকে যেন এই মনোভাবের অধিকারী হই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে উপাচার্য মহোদয় প্রধান অতিথির হাতে একটি বিশেষ উপহার তুলে দেন।

বিশ্ববিদ্যায়ের প্রক্টর ফাদার লরেন্স নরেশ দাশ, সিএসসি নবাগত শিক্ষার্থীদেরকে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা প্রদান করেন।

ফাদার আদম এস পেরেরা, সিএসসি নবীনদের উদ্দেশ্যে বলেন যে, ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের ২৯ এপ্রিল নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের অনুমতি নিয়ে যাত্রা শুরু করে। একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয় ৪ ডিসেম্বর ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে। আমাদের এই বিশ^বিদ্যালয় তার জন্ম থেকেই নিজস্ব ক্যাম্পাসে অবস্থিত। নবীনবরণ অনুষ্ঠানকে সার্থক ও সাফল্যম-িত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে তিনি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

অতঃপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে পরিবেশিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

পরিশেষে নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ-এর পথচলা শুভ হোক। এ বিদ্যাপীঠ হয়ে উঠুক উচ্চ শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র। প্রিয় শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হোক ক্যাম্পাস। উচ্চ শিক্ষায় নটর ডেম ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ-এর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়–ক বিশ্বজুড়ে। দ্বাদশ ব্যাচের নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ অনুষ্ঠানে এমনই প্রত্যাশা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকলের।

সর্বশেষ আপডেট: ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৯:৩৪
ডেস্ক রিপোর্ট

সর্বশেষ আপডেট


বিনোদন