দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকায় দলের মধ্যে যেমন হ-য-ব-র-ল তেমনিভাবে জোটের অন্যান্য শরিক দলগুলোতেও সংকটাপন্ন অবস্থা বিরাজ করছে। কোনটার অবস্থা ‘ওয়ান ম্যান, ওয়ান পার্টি’ অর্থাৎ ব্যক্তিই দল, আবার কোনটা সাইনবোর্ড নির্ভর দল। অনেক দলের আবার কোনো অফিস নেই। শুধুমাত্র নাম দিয়েই দলের পরিচয়।
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর বিএনপি যে পরিস্থিতি এই পরিস্থিতিতে বিএনপিকে কখনোই পড়তে হয়নি।
অপরদিকে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অবস্থান করছেন সূদুর লন্ডনে। যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে অনেকটাই হতাশা বিরাজ করছে। যার প্রমাণ, বিগত দিনে আন্দোলন কর্মসূচি দিয়ে নেতাকর্মীদের মাঠে পায়নি দল। আর তৃণমূলের অভিযোগ আছে সিনিয়র নেতারা কর্মসূচি দিয়ে মাঠে নামে না।
এদিকে তৃণমূল তাকিয়ে আছে হাইকমান্ডের দিকে। যে সেখান থেকে কি নির্দেশ আসে। আর হাইকমান্ড তাকিয়ে আছে জনগণের দিকে। জনগণ কখন মাঠে নামবে। এমন সিদ্ধান্তহীনতার কারণে তাদের দেয়া কর্মসূচিগুলো আলোর মুখ দেখছে না বলেও মনে করছে অনেকে।
বিভিন্ন সভা সেমিনারে দলের নীতি নির্ধারকরা বিচ্ছিন্ন বক্তব্য দিচ্ছেন। কেউ বলছেন, দল খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেবে। আবার কেউ বলছেন, যেহেতু সরকার খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক হয়রানি করতে কারাগারে নিয়েছে সেহেতু আপাতত তার মুক্তি অনিশ্চিত। তাই একদিকে তাকে মুক্ত করতে হবে একই সঙ্গে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে। অনেকে তাকে কারাগারে রেখেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
যখন দলের মধ্যেই নানা সমস্যায় জর্জরিত সেখানে জোটের অবস্থা কেমন হবে তা সহজেই অনুমেয়। জোটের দু-একটি দল ছাড়া অনেকের অস্তিত্ব এখন প্রশ্নবিদ্ধ। কেউ কেউ বক্তব্য বিবৃতি নির্ভর হলেও অনেক দলই নামসর্বস্ব।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন সচিব অক্টোবরে তফসিল ঘোষণা হবে বলেও আগাম জানিয়েছেন। ডিসেম্বরকে লক্ষ রেখে আওয়ামী লীগ সহ ১৪ দলীয় জোট ইতোমধ্যে মাঠ চষে বেড়াচ্ছে। সেখানে ২০ দলীয় জোট রয়েছে দ্বিধায়।
বিএনপি থেকে স্পষ্টত বার্তা চায় জোটের শরিকেরা। আসন বন্টন, নির্বাচনে যাবে কি যাবে না, কি ধরনের কর্মসূচি আগামীতে জোট দেবে ইত্যাদি। সম্পতি এক আলোচনা সভায় জোটের অন্যতম শরিক এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘নির্বাচনে যাবেন কি যাবেন না সেটা স্পষ্ট করুন। এখন যাবেন বল হুট করে নির্বাচন বন্ধ বলবেন এমন অবস্থা দেখতে চাই না। তিনি আরও বলেন, দলকে যদি জোট মুল্যায়ন না করে তাহলে ভিন্ন সুযোগ রয়েছে।’
এর আগে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী পরাজিত হয়। এরপর ২০ দলীয় জোটের বৈঠক ডাকা হয় গুলশানে। সেখানে জোটের পক্ষ থেকে প্রার্থী দেয়ার কথা বলা হলে জামায়াতে ইসলামী তাদের দলীয় প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করে বৈঠক ত্যাগ করে। এছাড়া ঐ বৈঠকে খেলাফত মজলিশও তাদের প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করেন।
পাঠকের মন্তব্য