অভিনেত্রী ও মডেল কাজী নওশাবা আহমেদ জামিনে মুক্তি পেয়ে পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি স্বামী এহসান রহমান জিয়ার ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। সেখানে নওশাবা সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে, প্রধানমন্ত্রীর উদার মনোভাবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
পোস্টে নওশাবা যে কথাগুলো লিখেছেন তা তুলে ধরা হলো: ‘দেশের সবাইকে ঈদুল আজহার বিলম্বিত শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আপনারা জানেন, আমাকে ঈদের আগের বিকেলে নিম্ন আদালত জামিন প্রদান করেছেন। এর মধ্য দিয়ে দেশের স্বাধীন বিচার বিভাগ তার মানবিকতার উজ্জ্বল এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমি অভিভূত। আমার আইনজীবীদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। আমার একমাত্র কন্যা প্রকৃতি’র সঙ্গে ঈদের আনন্দ পরিপূর্ণভাবে অনুভব করার সুযোগ করে দেয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানোর উপযুক্ত ভাষা আমার জানা নেই। তিনি বাংলাদেশের ষোল কোটি মানুষের একজন পরীক্ষিত, প্রকৃত ও সুযোগ্য অভিভাবক। এই ভূমিকার বাইরেও তিনি যে একজন মমতাময়ী মা তা আবারো আমি নিজে একজন মা হিসেবে হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে বুঝতে পারলাম। নিকট অতীতেও রোহিঙ্গা ইস্যুতে তার মাতৃত্বসুলভ গুণাবলীর অনেক দৃষ্টান্ত তিনি রেখেছেন।’
নওশাবা আরো লিখেছেন: ‘পুলিশ, র্যাব, ডিবি, সাইবার ক্রাইম ইউনিট আর কাশিমপুর কারাগারে দায়িত্বরত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিটি সদস্য, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা এবং নার্সেরা— যারাই আমাকে অনেক প্রফেশনালিজম আর সহমর্মিতার সঙ্গে প্রতিটি স্তরে হেফাজত করেছিলেন, তাদের প্রতিও আমার আকুণ্ঠ কৃতজ্ঞতা। অভিনয় শিল্পী সমিতির প্রেসিডেন্ট এবং সদস্যবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদসহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষক-ছাত্রছাত্রী, বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মী আর বাংলাদেশের সকল শিশুসহ আমার শুভাকাঙ্ক্ষীদের বলতে চাই— আপনারা যারা বিগত কয়েক সপ্তাহে আমার পরিবারের পাশে থেকেছেন, ক্রমাগত সাহস আর আশ্বাস দিয়েছেন। যার যার ব্যক্তিগত ও পেশাগত অবস্থান থেকে এগিয়ে এসেছেন, তাদের জন্য আমার অনেক ভালোবাসা রইল। আপনাদের সবার নিঃস্বার্থ প্রার্থনাতেই আমার মেয়ে প্রকৃতি ঈদের সারাটা দিন তার মাকে কাছে পেয়েছে।পরিশেষে আমি আবারো একান্ত অনুরোধ করে বলতে চাই, যেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার চিরায়ত মাতৃত্বসুলভ মমতায় আমার আবেগতাড়িত ও অনিচ্ছাকৃত ভুলকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখেন।’
উল্লেখ্য গত ৪ আগস্ট নিরাপদ সড়কসহ কয়েকটি দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে ফেসবুকে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে কাজী নওশাবা আহমেদ গ্রেপ্তার হন। ঐ দিন তিনি ভুল এবং নেতিবাচক তথ্য দিয়ে একটি ভিডিও শেয়ার করেন। ভিডিওটি ভাইরাল হয়। উপরন্তু লাইভ ভিডিওতে নওশাবা যা বলেছিলেন ওই ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়নি। ফলে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে তিনি জামিনে মুক্তি পান। ১ অক্টোবর পর্যন্ত নওশাবার অন্তর্বর্তীকালীন জামিন বহাল থাকবে।
পাঠকের মন্তব্য