পল্লী বিদ্যুতের তীব্র লোডশেডিংয়ে বিপাকে পড়েছেন লক্ষ্মীপুরের রামগতি- কমলনগরের গ্রাহকরা। বেশ কয়েক বছর ধরে বিদ্যুতের এমন লোডশেডিং এ বিক্ষুদ্ধ হয়ে পড়েছেন গ্রাহকরা। ১৮ ও ১৯ আগস্ট দিনের বেলায় বিদ্যুতের দেখা মিলেনি তেমন, রাতের বেলায় লোডশেডিংএর মধ্য দিয়ে মাত্র ৪ঘন্টা বিদ্যুৎ ব্যবহারে অসুবিধার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
“আর কত ধৈর্য্য ধরতাম? ঠিক মত কারেন্ট থাকেনা। দোকানের কাস্টমার আই চলি যা। ইনকামও নাই ক’দিন ধরে। একদম অতিষ্ঠ লাগতেছে। মোবাইলেও চার্জ নাই। কার কোথায় কোন বিপদ একটু খোঁজ-খবরও নিতে পারতেছি না।”
ক্ষোভের স্বরে কথাগুলো বলছিলেন কমলনগরের করুণানগরের সাইমুন টেলিকমের স্বত্বাধিকারী নাদিম হোসেন স্বজন।
সাধারণ মানুষের মাঝেও বেড়ে অসন্তোষ। ঢাকা থেকে কর্মজীবী তারেক মাসুদ ঈদে স্বজনদের নিয়ে ঘুরতে এসেছেন রামগতি উপজেলার চর বাদামের গ্রামের বাড়িতে। তিনি আক্ষেপ করে বলছিলেন, “বিদ্যুতের এমন সংকটে অসহ্য ভোগান্তি লাগছে। স্বজনরা বলতেছেন কোথায় এলাম? আবার ঢাকা শহর ফিরে যেতাম। পড়লাম চরম বিপাকে। না আসতেই ঢাকায় যাইতে বলে। এ ৪ঘন্টা বিদ্যুৎ দিয়ে কী হয়? গরমের জ্বালায় টিকে থাকাও কষ্ট হচ্ছে।”
এদিকে লোডশেডিং এর কারণে টিভি, ফ্রিজ, এসিসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্সের মূল্যবান যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে।
লক্ষ্মীপুরের ইতিহাস ঐতিহ্য ও জেলা তথ্যচিত্র নিয়ে “লক্ষ্মীপুর ডায়েরি” নামক বই লিখেছেন গবেষক, শিক্ষক ও সাংবাদিক সানা উল্লাহ সানু। তিনি বলছিলেন, “বিদ্যুতের এমন বেপরোয়া বিভ্রাটের কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে কোন নজরদারি নেই। অন্যান্য অঞ্চলে ঠিকমত বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ হলেও এ অঞ্চলের মানুষের বেলায় তা বিভিন্ন অজুহাত হয়ে দাঁড়ায়। অথচ এখান থেকে সরকারের রাজস্বখাতে যে বিরাট আয় জমা হচ্ছে তার দিকেও কোন নজর নেই কর্তৃপক্ষের। ল্যাপটপে ঠিকমত চার্জ থাকে না। জরুরি বহু কাজ আটকে আছে। এর প্রতিকার কবে হবে ঠিক বলাও মুশকিল।”
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক তোরাবগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক মো. আলা উদ্দিন বলছিলেন, “এক বার বিদ্যুৎ আসে আরেক বার যায়। এতে করে ব্যাংকিং কাজে মাঝে মাঝে সমস্যায় পড়তে হয়। আইপিএস দিয়ে কতক্ষণ ব্যাংকের কাজ করা যায়? ঠিকমত বিদ্যুৎ না থাকলে গ্রাহকদের সঠিক সেবাটা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যায়। একটা শিল্পাঞ্চলে বিদ্যুতের শূন্যতা দূর না হলে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়বে।”
পাঠকের মন্তব্য