সৌরজগতের বাইরে অনেক গ্রহে পানি রয়েছে!

বিজ্ঞানীরা নতুন একটি গবেষণায় জানিয়েছেন যে, এক্সোপ্লানেটগুলোতে জীবনধারণের উপযোগী পর্যাপ্ত পানি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

আমাদের সৌরজগতের বাইরে প্রত্যেকটি গ্রহই একেকটি এক্সোপ্লানেট। এক্সোপ্লানেট নামটা শুনলেই অনেকের চোখের সামনে ভেসে ওঠে অনেক রকম গ্রহের কথা। অনেকে চলে যান কল্পনার রাজ্যে! এক্সোপ্লানেট নিয়ে জ্যোতির্বিদদের মধ্যেও আছে অনেক কৌতুহল।

জ্যোতির্বিদরাও এক্সোপ্লানেট নিয়ে গবেষণায় সর্বদা মত্ত। এক্সোপ্লানেটগুলো ভিন্ন ভিন্ন নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণ করে এবং এই গ্রহগুলোতে জীবিত প্রাণ থাকার বেশ সম্ভাবনা রয়েছে।

এক্সোপ্লানেট যেহেতু অনেক দূরে অবস্থিত তাই এসব গ্রহ সম্পর্কে খুব কম তথ্য জানতে পারেন বিজ্ঞানীরা। এক্সোপ্লানেট খুঁজতে এ অবধি মহাকাশে পাঠানো হয়েছে অনেকগুলো স্পেস টেলিস্কোপ। এর মধ্যে কেপলার স্পেস টেলিস্কোপ অন্যতম।

সম্প্রতি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা তাদের নতুন গবেষণার সঙ্গে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার কেপলার স্পেস টেলিস্কোপ এবং ইউরোপিয়ান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসার গাইয়া স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য একত্রিত করে, এক্সোপ্লানেট সম্পর্কে আরো বেশি তথ্য উদঘাটন করেছেন।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে আবিষ্কার হওয়া নতুন এক্সোপ্লানেটগুলোর মধ্যে অনেকগুলোতেই পানি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। যেহেতু গ্রহগুলোতে পানি থাকতে পারে, তারমানে সেখানে আমাদের পৃথিবীর মতোই জীবন থাকতে পারে। পৃথিবীর বাইরে সম্ভাব্য জীবন নিয়ে যা সত্যিই খুব উত্তেজনাপূর্ণ একটি ব্যাপার।

পানি থাকার সম্ভাবনার সিদ্ধান্তে পৌঁছানো প্রসঙ্গে এই গবেষণার প্রধান গবেষক ড. লি জেন বলেন, ‘গ্রহগুলোর ভরের সঙ্গে ব্যাসার্ধ কিভাবে জড়িত সেদিকে আমরা লক্ষ্য করেছি এবং একটি মডেল তৈরি করেছি যা এই সম্পর্ক ব্যাখা করতে পারে।’

ফলাফলে দেখা গেছে, যেসব এক্সোপ্লানেট পৃথিবীর তুলনায় দেড় গুণ বড় সেগুলোকে পাথুরে গ্রহ হিসেবে মনে হয় এবং যেগুলো পৃথিবীর তুলনায় আড়াই গুণ বড় সেসব গ্রহে সম্ভবত পানি রয়েছে।

কেপলার মিশনে এখন পর্যন্ত এক্সোপ্লানেট হতে পারে এমন ৪ হাজার গ্রহ আবিষ্কার হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ৩৫ শতাংশ গ্রহ আকৃতিতে পৃথিবীর চেয়ে বড় এবং এই গ্রহগুলোতে পানির থাকার সম্ভাবনা প্রবল।

ড. জেন বলেন, ‘এক্সোপ্লানেট প্রার্থী তালিকার অনেক গ্রহ চূড়ান্ত করতে সক্ষম হবে সম্প্রতি মহাকাশে পাঠানো নাসার টেস স্পেস টেলিস্কোপ। এছাড়া নাসা কর্তৃক নির্মীয়মান পরবর্তী প্রজন্মের স্পেস টেলিস্কোপ (জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ) হয়তো কিছু এক্সোপ্লানেটের বায়ুমণ্ডল শনাক্ত করতে সম্ভব হবে। তাই সৌরজগতের বাইরের গ্রহগুলো নিয়ে আগ্রহীদের জন্য এটি একটি উত্তেজনাপূর্ণ সময়।’

কিছু এক্সোপ্লানেট পৃথিবীর মতোই অনুরূপ জীবনের জন্য সম্ভাবনা থাকতে পারে আবার কিছু এক্সোপ্লানেট বেশ ভিন্ন পরিবেশের হতে পারে। কিছু গ্রহের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ২০০ থেকে ৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা প্রত্যাশা করছেন। প্রাণ ধারণের উপযোগী সম্ভাব্য গ্রহগুলোতে উচ্চ চাপের বরফের নিচে তরল পানি থাকতে পারে এবং গ্রহগুলোর কেন্দ্র পাথুরে হতে পারে।

তথ্যসূত্র : মিরর

সর্বশেষ আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০১৮, ০০:৫৩
অনলাইন ডেস্ক

পাঠকের মন্তব্য

সর্বশেষ আপডেট


বিনোদন