ভারতের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ি ৯৩ বছর বয়সে মারা গেছেন। ১৬ আগস্ট, বৃহস্পতিবার অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্স (এআইআইএমএস) কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। গত আড়াই মাস ধরে তিনি এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ভারতের স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা ৫ মিনিটে ভারতের দশম প্রধানমন্ত্রী মারা যান বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এক বিবৃতিতে এআইআইএমএস বলেছে, ‘দুঃখজনকভাবে গত ৩৬ ঘণ্টায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অবস্থার খুবই অবনতি হচ্ছিল। আমরা তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখি। আমাদের সর্বোত্তম চেষ্টার পরও তাকে হারিয়ে ফেললাম।’
গত ২৪ ঘণ্টায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুই দফায় বাজপেয়িকে দেখতে হাসপতালে গেছেন। শেষ আড়াই মাসে মোট চারবার বাজপেয়িকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি।
১৪ আগস্টের পর বাজপেয়ির স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছিল। ১৫ আগস্ট তাকে দেখতে হাসপাতালে যান মোদি। তিনি যাওয়ার এক ঘণ্টা পরই তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার কথা জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বাজপেয়ির একটি কিডনি দীর্ঘদিন ধরেই বিকল। শুধু একটি কিডনি কাজ করছিল। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। কিডনি ও ফুসফুসে জটিলতা নিয়ে ১১ জুন তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন।
বাজপেয়ির মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পরই শোক প্রকাশ করে নরেন্দ্র মোদি টুইট করেন, ‘তিনি এ জাতির জন্যই বেঁচে ছিলেন এবং অধ্যবসায়ের সঙ্গে জাতির সেবা করে গেছেন।’
সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জিও শোক জানিয়েছেন। শোক জানিয়েছে বিজেপির বিরোধী দল কংগ্রেস। দলটির সভাপতি রাহুল গান্ধী বলেছেন, ‘ভারত তার এক মহান সন্তানকে হারাল।’ বাজপেয়ি বিজেপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
বাজপেয়ি ছিলেন ভারতের ১০ম প্রধানমন্ত্রী। ১৯৯৮ সালের ১৯ মার্চ থেকে ২০০৪ সালের ২২ মে পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এর আগে ১৯৯৬ সালে তিনি ১৬ দিনের জন্য প্রধানমন্ত্রী হন।
১৯২৪ সালে জন্ম নেওয়া অটল বিহারি বাজপেয়ি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ভারতের মূল্যস্ফীতি খুব কম ছিল। ভারতের গ্রামগুলোর জন্য তিনি অর্থনৈতিক সংস্কার ও নীতি নিয়ে কাজ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন শেষে বাজপেয়ি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হন। কিন্তু শারীরিক নানা জটিলতার কারণে তিনি সে কাজ বেশি দিন চালিয়ে যেতে পারেননি। শারীরিক অসুস্থতার কারণে নিজের জীবনকে তিনি বাড়ির মধ্যে সীমাবদ্ধ করে রেখেছিলেন।
১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সমর্থক ছিলেন বাজপেয়ি। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাজপেয়িকে সম্মাননা দেয় বাংলাদেশ সরকার।
পাঠকের মন্তব্য