বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, পরিস্থিতির জন্য হলেও বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসতে বাধ্য হবে সরকার।
১৩ আগস্ট, সোমবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী তরুণ দলের আয়োজনে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত এক সভায় মওদুদ এমন মন্তব্য করেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, শোনা যাচ্ছে বিনা শর্তে সংলাপ হতে পারে, ফোনে সংলাপ হতে পারে, অনানুষ্ঠানিক সংলাপ হতে পারে। আবার শোনা যাচ্ছে, বিএনপির সঙ্গে কোনো সংলাপই হবে না। কিন্তু একটি কথা খুবই স্পষ্ট যে, সরকারের পক্ষ থেকে যাই বলা হোক না কেন, আর মাত্র ২-৩ মাস সময় আছে। যেখানে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে যে, বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসতে সরকার বাধ্য হবে।’
জাতীয় নির্বাচনে আগে সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবি করে মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। নির্বাচন কমিশন পুনঃগঠন করতে হবে।’
জাতীয় ঐক্য মঞ্চ তৈরি করার চেষ্টা করছি মন্তব্য করে প্রবীণ এই আইনজীবী বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে। কারণ আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারকে উৎখাত করব। তা না হলে আগামী প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না।’
সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির এই নীতি নির্ধারক বলেন, ‘প্রায় ১০ বছর হতে চলেছে অরাজক সরকারের। বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়ায় জনগণের কাছে কোনো দায়বদ্ধতা ছিল না। তার অনেকগুলো উদাহরণ রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রিজার্ভ হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে উধাও হয়ে গেল, সোনা তামা হয়ে গেল, পাথর ও কয়লা গায়েব হয়ে গেল, একজনও গ্রেফতার হয়নি। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ওপর হামলা হল, কেউ গ্রেফতার হয়নি। তবে এর দুটো কারণ থাকতে পারে। এক, এরা সরকারের মদদপুষ্ট মানুষ। আরেকটা হলো দুই পক্ষের জন্য দুই আইন। নিজেদের বেলায় প্রয়োগ হবে না। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের জন্য প্রয়োগ হবে।’
নির্বাচন কমিশনের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া সম্ভব নয় অভিযোগ করে মওদুদ বলেন, ‘সদ্য সমাপ্ত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নতুন করে প্রমাণিত হল, এই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না। সেখানে সবকিছু করেছে পুলিশ আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অবস্থা দেখলে দেশে কোনো সরকার আছে বলে মনে হয় না।’
সংগঠনের সভাপতি ডা. মো. আবু বকর সিদ্দিকের সভাপতিত্বে ও দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন-বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, তৈমুর আলম খন্দকার, বাংলাদেশের লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, শাহবাগ থানা কৃষকদলের সভাপতি এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
পাঠকের মন্তব্য