জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আবেদন নিষ্পত্তির আদেশ মুলতবি করেছেন আপিল বিভাগ। তবে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিল শুনানি শেষ না করতে পারলে রিভিউ আবেদন বিবেচনা করবেন আদালত।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এবং খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন মওদুদ আহমদ, এজে মোহাম্মদ আলী ও জয়নুল আবেদীন।
এর আগে ৯ জুলাই এ আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়।
এজে মোহাম্মদ আলী আদালতে বলেন, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিল মামলার নিষ্পত্তিতে উচ্চতর আদালতের আদেশ পুনরায় বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেছেন খালেদা জিয়া। ওই আবেদনের শুনানির জন্য আপিল বিভাগে ৯ জুলাই দিন ধার্য করেন।
এ মামলায় ছয় আসামির মধ্যে খালেদা জিয়াসহ তিনজন কারাবন্দি। বাকি তিন আসামি পলাতক রয়েছেন। খালেদা জিয়া ছাড়া বাকি দুজন হলেন- মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ। পলাতক তিনজন হলেন- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান মামলাটিতে খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন।
একই সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামালউদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।
রায় ঘোষণার ১১ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকালে রায়ের সার্টিফায়েড কপি বা অনুলিপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এর পর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ২০ ফেব্রুয়ারি তারা এ আবেদন করেন।
২২ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ এবং অর্থদণ্ড স্থগিত করে নথি তলব করেন হাইকোর্ট। এর পর ৭ মার্চ অপর আসামি মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামালের আপিলও শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। ১০ মে আরেক আসামি শরফুদ্দিনের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন আদালত।
এ মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করে জামিন আবেদনের পর খালেদা জিয়াকে ১২ মার্চ চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের পর গত ১৬ মে তা বহাল রেখে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
এদিকে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে খালেদা জিয়ার আপিল মামলাটি নিষ্পত্তি করতে আপিল বিভাগের আদেশ পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানির জন্য আজকের কার্যতালিকায় এসেছে।
এ ছাড়া কুমিল্লায় নাশকতার অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলার কার্যক্রম বাতিল চেয়ে খালেদা জিয়ার করা আবেদনের ওপর শুনানি হয়েছে। রোববার বিকালে দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষে আজ পর্যন্ত মুলতবি করেছেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ।
পাঠকের মন্তব্য