বাংলাদেশের ঢাকার আশকোনা এলাকায় র্যাবের নির্মাণাধীন সদরদপ্তরে বোমা বিস্ফোরণের পর মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন তথাকথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএস এই হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে। এতে হামলাকারী নিজে নিহত এবং র্যাবের দুজন সদস্য আহন হন।
র্যাবের ব্যারাকে ঢোকার প্রবেশ ফটকের থেকে কয়েক গজ দূরত্বে এই হামলাটি চালানো হয়। সেই স্থানটিতে সাধারণত প্রশাসনিক কাজকর্মে নিয়োজিত লোকজন কাপড় ধোয়া এবং গোসল করে থাকেন।
র্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ জানিয়েছেন, বেলা আনুমানিক একটার দিকে সেখানে এই ‘আত্মঘাতী বিস্ফোরণ’ ঘটানো হয়।
মি. মাহমুদ বলেন “আমাদের এই স্থাপনাটির মাঝখান দিয়ে একটি রাস্তা গেছে এবং বাউন্ডারিটা গ্রিল এবং দেয়ালের সমন্বয়ে গঠিত। প্রাচীর সংলগ্ন একটি জায়গা আছে সেখানে যারা সাধারণ অ্যাডমিনের কাজ করে থাকেন, তারা কাপড় ধোন এবং গোসলের ব্যবস্থা আছে। সেখানে প্রাচীরের নিচ থেকে একজনকে আসতে দেখে তারা তাকে চ্যালেঞ্জ করে। সেসময় ওই ব্যক্তি পালাতে গিয়ে বোমার বিস্ফোরণ ঘটান। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়”।
বিস্ফোরণে র্যাবের দুজন কর্মী আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলেও জানান মি. মাহমুদ।
বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে একজনের ছিন্নভিন্ন দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। মাংসপিন্ডও পড়ে থাকতে দেখা যায় দেহের পাশেই। তার পরনে কালো রং এর পোশাক ছিল এবং পাশেই একটি লাল রং-এর গামছাও দেখা যায়।
র্যাবের কর্মকর্তা জানান, ভেতরে আরো বোমা ছড়িয়ে থাকতে পারে এমন আশংকা থাকায় ঘটনার পরপরই বোমা নিষ্ক্রিয়কারী ইউনিট সেখানে পৌঁছায়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এবং পুলিশের ক্রাইম সিন ইউনিট, র্যাবের বিভিন্ন ইউনিট থেকে সদস্যরা সেখানে পৌঁছান।
একের পর এক গাড়ি ঢুকতে এবং বের হতে দেখা যায়। দুপুরে ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই ফটকের বাইরে দেখা যায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি প্রচুর উৎসুক মানুষের ভিড়।
র্যাবের এই ব্যারাকের ঠিক ডানপাশে আশকোনা হাজ্বী ক্যাম্পটি অবস্থিত। ক্যাম্প সংলগ্ন দেয়ালটির দিকেই ঘটেছে বিস্ফোরণের ঘটনাটি।
সেখানে আজ দেখা গেল র্যাবের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ওই প্রাচীরটির আশেপাশে অন্যান্য সময় চায়ের দোকান পাট থাকলেও শুক্রবার দুপুরের দিকটায় সেসব বন্ধ থাকায় সেই নির্জনতার সুযোগ নিয়ে কেউ ভেতরে ঢুকে থাকতে পারে বলে মনে করছেন আশে-পাশের দোকানিরা।
বিস্ফোরণের সময় তাৎক্ষণিকভাবে অনেকেই বিকট শব্দ শুনে ভেবেছেন ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরণ। এমনটাই বলছিলেন উল্টোদিকের কয়েকজন দোকানি । এদিকে এই বিস্ফোরণের ঘটনার পর সব বিমানবন্দর এবং কারাগারে বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
চট্টগ্রামে লম্বা সময় ধরে চলা জঙ্গিবিরোধী অভিযানের একদিন পরেই এই ঘটনাটি ঘটলো। আবার এটি ঘটলো সিরিয়ায় আইএস-এর বাংলাদেশি বোমারুর আত্মঘাতী হামলার ভিডিও প্রকাশেরও একদিন পরেই।
পাঠকের মন্তব্য