বাংলাদেশ ট্রেড ক্যাটালগ (দিদার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড) নামে একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে সহায়তা (স্পন্সর) করতে কয়েকটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
স্পন্সর করতে অস্বীকৃতি জানালে সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা করছেন রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা।
বর্ষপূতির অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানটি যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায়, সেজন্য মন্ত্রীর পক্ষে একান্ত সচিব সৈয়দ রাশেদুল হোসেন চিঠিটি স্বাক্ষর করে চারটি সরকারি ব্যাংক, একটি আধা সরকারি ব্যাংক, একটি বেসরকারি ব্যাংক ও দুটি ইন্সুরেন্স কোম্পানির কাছে পাঠিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ ট্রেড ক্যাটালগ’র (দিদার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সম্পাদক সুলতানা এম চিশতি। প্রতিষ্ঠানটি কয়েক বছর আগে দেশের ছোট বড় সব ধরণের উদ্যোক্তাদের নাম, ঠিকানা ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের পরিচয় তুলে ধরে একটি বই প্রকাশ করেছেন। ১৮ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ১৩ জুলাই দেশের পেশাদার ব্যবসায়ীকে গোল্ডেন পেন অ্যাওয়ার্ড প্রদান করতে যাচ্ছে।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, “দিদার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড” বাংলাদেশ ট্রেড ক্যাটালগের ১৮ বছর পুর্তি উপলক্ষ্যে চলতি বছরের ১৩ জুলাই ‘গোল্ডেন পেন অ্যাওয়ার্ড’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ১ জুলাই বা তার আগে পরে যেকোন সময় আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ট্রেড ক্যাটালগ থেকে আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে। অনুষ্ঠানটি যাতে সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করতে পারেন সেজন্য আপনাদেরকে স্পন্সর হিসেবে সাহায্য প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হলো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীণ সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, আধা সরকারি আইএফআইসি ব্যাংক, বেসরকারি ডাচ বাংলা ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি ও গ্রীন ডেল্টা ইন্সুরেন্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এবিষয়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীণ একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, অর্থমন্ত্রীর একান্ত সচিব স্বাক্ষরিত একটি আমারে কাছে এসেছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে পরিচালনা পর্ষদের সভায় আলোচনা করব। শুধু অর্থমন্ত্রী একা নন, অনেক মন্ত্রী-এমপি একরম চিঠি পাঠিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের জন্য সহায়তা চান। আমরা এসব বিষয় খুব টেনশনে থাকি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এমডি বলেন, এর আগে অর্থমন্ত্রী সিলেটের একটি নৌকাবাইচের অনুষ্ঠানে জনতা ব্যাংককে স্পন্সর করতে চিঠি দিয়েছিলেন। ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান আবুল বারকাত তা প্রত্যাখান করেন। তার কয়েকদিন পর সরকারি ব্যাংকের সিএসআর বন্ধ করতে চিঠি দিয়েছিল অর্থমন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এধরণের চিঠির কারণে আমরা অসহায়ত্ব বোধ করি।
এবিষয়ে কথা বলার জন্য যোগাযোগ করা হলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের একান্ত সচিব সৈয়দ রাশেদুল হোসেন কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বিষয়টি নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ করেন।
পাঠকের মন্তব্য