পরীক্ষার আগের দিনই প্রশ্ন ফাঁস

পরীক্ষার আগের দিনই প্রশ্ন ফাঁস
পরীক্ষার আগের দিনই প্রশ্ন ফাঁস

প্রশ্নপত্র ফাঁস বাংলাদেশের একটি অতি সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার পর এবার যুক্ত হয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা। উপজেলা আন্তঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম সাময়িক পরীক্ষায় কোন কোন শিক্ষক পরীক্ষার এই প্রশ্নগুলো কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর উপজেলার তেরশ্রী কলেজের পুকুরের পূর্ব পাশে মেধা বিকাশ কোচিং সেন্টারের পরিচালক সুব্রত সরকার। গত ২৩ ও ২৪ এপ্রিলে অনুষ্ঠিতব্য বাংলা ও ইংরেজী পরীক্ষার আগের দিন বিকালে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেন প্রশ্নপত্র। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অভিভাবকরা জানায়, এসব অনিয়ম দীর্ঘ দিন ধরেই চলছে। প্রতিটি পরীক্ষার আগেই শিক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্র হাতে পেয়ে যায়। এতে পরীক্ষায় বেশী নম্বর পাওয়ার আশায় শিক্ষার্থীরা ভীড় জমাচ্ছে এই কোচিং সেন্টারে।

বিধি মোতাবেক সরকারি চাকুরীতে সম্পৃক্ত থেকে কোচিং করানোর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কোন তোয়াক্কা না করে তিনি কোচিং চালিয়ে যাচ্ছেন। মেধাবিকাশ কোচিং সেন্টারে প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন সকালে ও বিকালে কোচিং করাচ্ছেন কুস্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এসএসসি পাস কিংবা এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে এমন ছাত্রদেরকে কম বেতনে শিক্ষক হিসেবে কোচিং সেন্টার চালিয়ে আসছেন দীর্ঘ দিন ধরে। স্থানীয়ভাবে আরো জানা গেছে, মেধা বিকাশ কোচিং সেন্টারের আরো দু’টি শাখা ছিল মান্দারতা ও চরমাস্তুল গ্রামে। কিন্তু কোচিংয়ের নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও অসদাচরণের কারনে এলাকার লোকজনের চাপের মুখে শাখা দু’টি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। সকালে ও বিকালে কোচিং। রাতে হোম টিউশনি। অত্যন্ত ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে এই কোচিং সেন্টারের পরিচালক তার কর্মস্থল কুস্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তেমন সময় দিতে পারছেন না। এছাড়া সীট তৈরী, প্রশ্ন সাজেসন তৈরী করা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন তিনি। প্রশাসন তার এই কর্মকান্ড জেনেও রহস্যজনক কারনে নিরব রয়েছে। আর নির্বিবাদে তিনি দিনের পর দিন চালিয়ে যাচ্ছেন কোচিং বাণিজ্য।

তিনি তেরশ্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষকগণকে নিয়ে মেধা বিকাশ কোচিং সেন্টারে নিয়মিত কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে তিনি হোম ভিজিট করে থাকেন এবং কোচিং সংশ্লিষ্ট শিক্ষকগণ ক্লাসে শিক্ষার্থীদের কোচিং সেন্টারে পড়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে থাকেন। এছাড়া ক্লাসে ভালভাবে পড়া না বুঝিয়ে কোচিংয়ে বুঝাবেন বলে শিক্ষার্থীদেরকে অনেকটা বাধ্য করেন। যার ফলে অভিভাবকগণ ইচ্ছার বিরুদ্ধেও কোচিংয়ে সন্তানকে পাঠান। উল্লেখ থাকে যে, প্রধান শিক্ষক সুব্রত সরকার স্কুলের পাঠ্যক্রম অবজ্ঞা করে গাইড প্রকাশনীর নিকট হতে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কোচিংয়ে পড়–য়া শিক্ষার্থীদের নিজের পছন্দ মত গাইড কিনতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। শিক্ষকদের বেতন ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দিয়ে সরকার শিক্ষার উন্নয়ন করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আর এইসব শিক্ষকগণ প্রশাসনের নাকের ডগায় সরকারি বিধিমালা উপেক্ষা করে নিজের মত করে চালিয়ে যাচ্ছেন কোচিং বাণিজ্য।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার সৈয়দা নাজনীন আলম জানান, নিয়ম বহির্ভূত কোচিং বাণিজ্য অবৈধ। এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৮, ২২:১৮
ডেস্ক রিপোর্ট

পাঠকের মন্তব্য

সর্বশেষ আপডেট


বিনোদন