দেশের অন্যান্য জেলার মতো মানিকগঞ্জ জেলায়ও রয়েছে সরকারি গ্রন্থাগার। মানিকগঞ্জ শহরের বেউথা এলাকায় ৩৩ একর জমির উপর স্থাপিত হয়েছে এই গ্রন্থাগারটি। ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই গ্রন্থাগারে সব বয়সি মানুষই বই পড়তে আসেন। এখানে বিভিন্ন বিষয়ে ৩৮ হাজার বই রয়েছে।
বইপ্রেমীরা এই লাইব্রেরিতে এসেও যেমন বই পড়তে পারেন তেমনি গ্রন্থাগারের সদস্য হয়ে বাসায় নিয়েও বই পড়তে পারেন। এ ক্ষেত্রে পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য সদস্যমূল্য ২০০ টাকা, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের জন্য ৩০০ টাকা এবং চাকরিজীবীদের জন্য ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রতিটি জাতীয় দিবসে গ্রন্থাগারের উদ্যোগে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আবৃত্তি, আর্ট ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়ে থাকে। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মেধা অনুযায়ী পুরস্কার এবং সনদপত্র প্রদান করা হয়।
তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, এই জেলা গ্রন্থাগারের সদস্য সংখ্যা মাত্র ২০০ জন। জেলা লাইব্রেরি হিসেবে পাঠক সংখ্যা খুবই সীমিত। অনেকের ধারণা, গ্রন্থাগারটি শহর থেকে দূরে অবস্থানের কারণে গ্রন্থাগারে মানুষের যাতায়াত কম। আবার অনেকেই জানেন না, এখানে গ্রন্থাগার আছে। এছাড়াও লাইব্রেরিতে তথ্যপ্রযুক্তি ও আধুনিকতার কোনো ছোঁয়া এখনো লাগেনি। এরপরও বেশ কিছু পাঠক এখানে নিয়মিত আসেন।
মানিকগঞ্জ জেলা লাইব্রেরিতে নিয়মিত আসেন মতিয়ার রহমান নামের একজন শিক্ষক। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘নানা ধরনের বই পড়তে আমার ভালো লাগে। এই ভালো লাগা পূরণ করার জন্য লাইব্রেরির কোনো বিকল্প নেই।’
এ লাইব্রেরিতে নিয়মিত আসেন মাস্টার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী রিক্তা ঋতু। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘লাইব্রেরিতে অনেক বই কিন্তু পাঠক খুবই সীমিত। অনেকেই জানেন না এখানে লাইব্রেরি আছে। আমরা জানি মানুষের জ্ঞান অর্জনের জন্য লাইব্রেরির বিকল্প নেই আবার লাইব্রেরির জন্য ভালো পাঠকেরও কোনো বিকল্প নেই।’
পঁয়তাল্লিশ বছর বয়সি মো. সায়েদুর হক গ্রন্থাগারটির অফিস সহকারি। রাইজিংবিডিকে তিনি বলেন, ‘এ লাইব্রেরিতে আমি ১৮ বছর ধরে চাকরি করছি। পাঠক বাড়ানোর জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। স্কুল-কলেজে চিঠিপত্র এবং পোস্টারের মাধ্যমে সকলকে জানানোর চেষ্টা চলছে। তা ছাড়া লাইব্রেরিটিকে আধুনিক করার চিন্তাও কর্তৃপক্ষের রয়েছে। আশা করছি, আগামীতে নতুন করে অনেকেই লাইব্রেরি মুখী হবেন।’