ভারতের দিল্লি হাইকোর্ট আজ জানিয়েছে যে বিতর্কিত ধর্মীয় প্রচারক জাকির নায়েকের সংস্থা ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত বৈধ ছিল।
ভারতের নিরাপত্তার জন্যই সরকার ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বলে মনে করেছে হাইকোর্ট। নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে মি. নায়েকের সংস্থা যে মামলা করেছিল, আজ তাতেই এই রায় দিয়েছে ওই আদালত।
ভারতের সন্ত্রাস দমন আইন বা ইউএপিএ অনুযায়ী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বছর নভেম্বর মাসে ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল।
ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন বা আইআরএফের দায়ের করা মামলাটির রায় দিতে গিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব সচদেভ জানিয়েছেন যে সরকার ওই সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার আগে যথেষ্ট চিন্তাভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বলেই আদালত মনে করে।
বিচারপতির মতে ওই সিদ্ধান্ত মোটেই খামখেয়ালি ছিল না। দেশের সার্বভৌমত্ব, অখন্ডতা ও জাতীয় নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ওই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল বলে মামলাটিতে সরকার যে বক্তব্য পেশ করেছে, তাকে মেনে নিয়েছে আদালত।
আইআরএফ আদালতে প্রশ্ন তুলেছিল যে সংগঠনটির বিরুদ্ধে নয়, জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, আর সেগুলোও অনেক পুরনো, ২০১২-১৩ সালের।
এত বছর পরে কেন সরকার সিদ্ধান্ত নিল, সে কথাও আদালতে তুলেছিলেন আইআরএফের আইনজীবীরা।
সরকার পক্ষ আদালতে জানিয়েছিল যে ওই সংগঠনটি এবং তার প্রধান জাকির নায়েক সহ অন্য সদস্যদের ভাষণের মাধ্যমে ভারতীয় যুবকদের একাংশ মৌলবাদী চিন্তায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ইসলামিক স্টেটের মতো সন্ত্রাসী সংগঠনে যোগ দিতে পারে, এই আশঙ্কা থেকেই সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
তার আগে আইআরএফের বিদেশি অনুদান গ্রহণের ওপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
দক্ষিণ ভারতের কেরালা রাজ্য থেকে তথাকথিত ইসলামিক স্টেটে যোগ দিয়েছেন বলে সন্দেহ করা হয় - এমন কয়েকজনের পরিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন যে আই আর এফের কয়েকজন সদস্যই তাদের ছেলেদের মৌলবাদে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।
ওই অভিযোগের ভিত্তিতে আইআরএফের কয়েকজন সদস্য গ্রেপ্তার হলেও মি. জাকির নায়েক তাঁর সংগঠন নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে আর ভারতে ফেরেননি।
আজকের রায়ের পরে আইআরএফের দুজন আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।
পাঠকের মন্তব্য