‘পহেলা বৈশাখ’ বাঙালির প্রাণের উৎসব। এই উৎসবকে বরণ করে নিতে উৎসবমুখর পরিবেশে ব্যস্ত সময় পার করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে বর্ষবরণ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে সংস্কৃতির রাজধানী খ্যাত সবুজ এ ক্যাম্পাস।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন কলা ভবনের সামনের জায়গাটিতে চারুশিল্পীদের মধ্যে কেউ গভীর মনোযোগে দিয়ে জলরঙের ছবি আঁকছেন, কেউ নকশা করছেন মাটির সরায়। অনেকে মিলে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি করছেন বিভিন্ন প্রাণীর কাঠামো। এছাড়া কাগজ কেটে ফুল, প্যাঁচা, পাখপাখালি তৈরি করছেন।
জাবিতে এবারের নববর্ষের থিম হলো ‘মুক্ত চিন্তার বিকাশ হোক ’। এ থিমকে লক্ষ্য রেখেই বিশাল আকারের প্রতীকি শাপলা ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রার কার্যক্রম।
এ থিম নির্বাচন করার বিষয়ে জাবির চারুকলা বিভাগের সভাপতি এম এম ময়েজ উদ্দীন বলেন, ‘ মুক্ত চিন্তার বিকাশের মাধ্যমে মানব কল্যাণ সাধন করা সম্ভব। মুক্ত চিন্তার প্রতীক হিসেবে আমরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লাল শাপলাকে বেছে নিয়েছি। এর পাশাপাশি লোকজ ঐতিহ্যগুলোও বিভিন্ন প্রতীকির মাধ্যমে মঙ্গল শোভাযাত্রার ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। ’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, কর্তৃপক্ষ মহাসমারোহে বর্ষবরণ ও পহেলা বৈশাখ উদযাপন করার নানা ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের উদ্যোগে তিনদিন ব্যাপী বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছে। চৈত্র সংক্রান্তির দিন সকাল দশটায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের চত্ত্বরে বৈশাখী মেলা উদ্বোধন করবেন ভিসি অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম।
পহেলা বৈশাখের প্রথম দিন সকাল সাতটায় ভিসি মহোদয়ের বাসভবনে ভিসি অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম ক্যাম্পাসবাসীর সঙ্গে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। এদিন সকাল সাড়ে নয়টায় প্রশাসনের উদ্যোগে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়ে পুরাতন কলাভবনে গিয়ে শেষ হবে। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন বিভাগ, ইনস্টিটিউট, অফিস, আবাসিক হল, জাবি স্কুল ও কলেজের ছাত্র-শিক্ষক, অফিসার, কর্মচারি, মহিলা ক্লাবের সদস্যবৃন্দ অংশগ্রহণ করবেন।
এরপর সকাল এগারোটায় মহুয়াতলায় বাংলা বিভাগের আয়োজনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হবে। এসময় বিভিন্ন অনুষদ, বিভাগ ও আবাসিক হল পৃথক পৃথকভাবে পহেলা বৈশাখ ও বর্ষবরণ উৎসব পালন করবে। বিকেল সাড়ে চারটায় সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের উদ্যোগে লোকগান ও বাউল সঙ্গীত ও নৃত্যানুষ্ঠান পরিবেশন করা হবে।
পহেলা বৈশাখের দ্বিতীয় দিনে বিকেল সাড়ে চারটায় সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে ছাত্রকল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্র এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হবে।