৮মার্চ বিশ্ব নারী দিবস। প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী বেশ আয়োজন করে এই দিবস উদযাপন করা হয়। বিশ্বের এক এক দেশে নারী দিবস উদযাপনের ধরন এক এক রকম হয়। কোথাও নারীর প্রতি সাধারণ সম্মান ও শ্রদ্ধা উদযাপনের মুখ্য বিষয় হয়। আবার কোথাও নারীদের আর্থিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠা বেশি গুরুত্ব পায়। বাংলাদেশে নারী দিবস পালিত হয়ে আসছে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা লাভের আগে থেকেই। সমঅধিকার নিশ্চত করতে নারী দিবস নারীদের জীবনে কেমন ভূমিকা রাখছে? নারী দিবস নিয়ে কি ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তরুণীরা। নারী দিবস নিয়ে কথা বলেছেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুন্নি আক্তার ও নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জয়তি চক্রবর্ত্তী।
দিবসের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে
মুন্নি আক্তার, আইন বিভাগ ৭ম সেমিস্টার। গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। ক্যাম্পাস সাংবাদিক হিসেবে নিয়মিত লেখালেখি করছেন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন পোর্টালে।
মুন্নি আক্তার বলেন, আজকের দিনে নারীদের অগ্রযাত্রা ছড়িয়ে পড়েছে সবক্ষেত্রে। নারীকে সব ক্ষেত্র থেকেই মূল্য এবং মূল্যায়ন করতে হবে। কাজের মাধ্যমে এই মূল্যায়ন হবে, নারী হিসাবে নয়। নারী-পুরুষ আলাদা করে নয় মানুষ হিসেবে মানুষকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে নারীদেরকে সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে। কারো অগ্রগতিতে পিছন থেকে টেনে নয় হাতে হাত রেখে এগিয়ে যেতে হবে বহুদূর। এই যাত্রায় নারীদের এগিয়ে যেতে হলে সমাজটা নারী বান্ধব হতে হবে। আমাদের দেশে নারীরা এখন পর্যন্ত সফলতার কাতারে এগিয়ে। সহানুভূতি ভালোবাসাই পৌঁছে দিবে এগিয়ে যেতে।
নারী দিবস সম্পর্কে তিনি বলেন, যতদিন নারী তার নিজস্ব স্বাধীনতা না পাবে ততদিন আমাদেরকে এইসব দিবস পালন করতে হবে। তাহলে পুরুষ দিবসও থাকতো। কিন্তু সেটাতো নাই। তাই দিবসের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।
দিনটির একটি মূল লক্ষ্য ‘নারী মুক্তি’
জয়তি চক্রবর্ত্তী নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের পঞ্চম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। জয়তি চক্রবর্ত্তী নারী দিবস সম্পর্কে বলেন, ‘নারী আন্দোলনের তথা নারী অধিকার এবং নারী মুক্তির একটি বিশেষ ঐতিহাসিক দিন ৮ ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারীদিবস হিসেবে স্বীকৃত। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই সরকারি বেসরকারি ভাবে এই দিনটি পালিত হয় বিভিন্ন আঙ্গিকে। অনুন্নত, উন্নয়নশীল এবং উন্নত দেশগুলোতে বিভিন্ন রূপে নারীর আন্দোলন সংগ্রামের পথ নির্ধারিত হয়। কিন্তু প্রতিটি দেশেই এই দিনটির একটি মূল লক্ষ্য ‘নারী মুক্তি’। সমস্ত রকম শোষণ, বৈষম্য, নির্যাতন, লাঞ্ছনা, বঞ্চনা থেকে মুক্তি পেয়ে সার্বিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়ে যেদিন লিঙ্গ বৈষম্য মুক্ত হয়ে একজন নারী পূর্ণ নাগরিক হিসেবে পরিবারে, সমাজে, রাষ্ট্রে ঠাঁই পাবে সেদিনই হবে আসল নারী মুক্তি। যার ফল ভোগ করবে এই পৃথিবীর শতভাগ নারী’ই। তখন সমাজে নারীদের জন্য বিশেষ কোনো দিনের প্রয়োজন হবে না বরং প্রতিটি দিনই হবে নারী-পুরুষের উভয়ের।’
পাঠকের মন্তব্য