সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে লেখক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলাকারী ফয়জুর রহমানের বাবা-মা ও ভাইবোনেরা পালিয়েছেন। তাঁদের ধরতে র্যাব ও পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
গতকাল শনিবার বিকেলে ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠান চলার সময় জাফর ইকবাল হামলার শিকার হন। তাঁর পেছনে থাকা ফয়জুর রহমান ওরফে ফয়জুল ধারালো অস্ত্র দিয়ে জাফর ইকবালকে আঘাত করেন। উন্নত চিকিত্সার জন্য জাফর ইকবালকে ঢাকার সিএমএইচে আনা হয়েছে। পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তাঁর চিকিৎসা চলছে।
হামলাস্থলে প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা ফয়জুরকে পিটুনি দেয়। পরে তাঁকে পুলিশে দেওয়া হয়।
ফয়জুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী কুমারগাঁওয়ের শেখপাড়া নামক স্থানে থাকতেন। ঘটনার পর সন্ধ্যার দিকে ফয়জুরের বাবা, মা, এক ভাই ও দুই বোন বাড়ি ছাড়েন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে হাসপাতালে যাচ্ছেন বলে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশায় করে তাঁরা বাড়ি থেকে বের হন। এরপর তাঁরা আর বাসায় ফেরেননি।
পুলিশ সূত্র জানায়, ফয়জুরকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হলেও তাঁর পরিবারের কেউ আসেননি।
আজ সকালে শেখপাড়ার বাসায় গিয়ে দেখা যায়, ঘরে বাল্ব চলছে। জানলাগুলো লাগানো হয়নি। তাড়াহুড়ো ঘরেই যে পরিবারের সদস্যরা বাসা ছেড়েছেন, তা বিভিন্ন আলামতে স্পষ্ট। এই বাসার পাশেই ফয়জুরের মামার বাড়ি। সেখানেও কেউ নেই।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গতকাল দিবাগত রাতেই ফয়জুরের শেখপাড়ার বাসায় অভিযান চালায়।
সিলেটের জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুর রহমান জানান, দিবাগত রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের ওই বাসায় অভিযান শুরু করে পুলিশ। সে সময় বাসাটি বাইরে থেকে তালা লাগানো ছিল। পুলিশ তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকে। তালাবদ্ধ বাসার ভেতরে ফয়জুরের মামা ফজলুর রহমান অবস্থান করছিলেন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়।
ফয়জুরের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের কলিয়ার কাঁপন ইউনিয়নের জগদল গ্রামে। সেখানেও তাঁর বাবা-মা ও ভাইবোনদের পাওয়া যায়নি।
র্যাব সুনামগঞ্জ কোম্পানি কমান্ডার ফয়সাল আহমেদ বলেন, আজ ভোরে জগদল গ্রামে ফয়জুরের গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। সেখানে ফয়জুরের চাচা আবদুল কাহারকে (৫০) পাওয়া যায়। তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সুনামগঞ্জ র্যাব কার্যালয়ে আনা হয়েছে।
পাঠকের মন্তব্য