বিশিষ্ট লেখক ও শিক্ষাবিদ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে সকাল সাড়ে দশটা ও বারোটায় যথাক্রমে এ কর্মসূচির আয়োজন করে জাবি শিক্ষক সমিতি এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী ঐক্যমঞ্চ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির মানববন্ধনে ভিসি অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, অসাধারণ মুক্তবুদ্ধি চিন্তার অধিকারী অধ্যাপক জাফর ইকবালের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। সরকারের কাছে তিনি জোর দাবি করেন, এই ধরনের হামলার যেন তদন্ত হয় এবং জড়িতদের যথাযথ বিচার হয়।তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বুদ্ধিজীবী শিক্ষকের অবদান অপরিসীম। আমরা সেই অবদানের ধারাবাহিক রেখে যেতে চাই। এ জন্য আমাদের সর্তক থাকতে হবে এবং রাষ্ট্রকে আমাদের নিরাপত্তা দিতে হবে।
প্রতত্নত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সিকদার মো. জুলকারনাইনের সঞ্চলনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. আমির হোসেন, অধ্যাপক ড. হানিফ আলী, শিক্ষক সমিতির সম্পাদক অধ্যাপক বশির আহমেদ প্রমুখ।মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ শেখ মো. মনজুরুল হক, গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. অজিত কুমার মজুমদার, অধ্যাপক ড. এ এ মামুনসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশ গ্রহণ করেন। মানববন্ধনে সমাপণী বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নূরুল আলম। বক্তারা অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের উপর বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এদিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ঐক্যমঞ্চের ব্যানারে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাবির বামপন্থী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে অধ্যাপক ড. জাফর ইকবালের ছাত্র আশরাফুল আলম সুজন বলেন, স্যার দেশকে ভালবেসে বিদেশে যাননি। তার উপর যারা হামলা করেছে তারা কখনোই বাংলাদেশের ভাল চাইতে পারে না। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের মূল খোঁজে বের করার দাবি জানান।সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক ড. নাসিম আক্তার হোসাইন, অধ্যাপক ড. মির্জা তাসলিমা সুলতানা, অধ্যাপক বশির আহমেদ প্রমুখ। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন জাবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ইমরান নাদিম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সুস্মিতা মরিয়ম, সম্পাদক দিদার আহমেদ ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন। বক্তারা অতিদ্রুত এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
জাবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ইমরান নাদিম বলেন, আমাদের বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং এই মৌলবাদী অপশক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে।
উল্লেখ্য, শনিবার এক যুবক বিশিষ্ট লেখক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালকে মাথায় ছুরিকাঘাত করে। তিনি বর্তমানে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।