ডলারের দাম বেড়েছে, রেমিট্যান্স প্রবাহও বেড়েছে

এখন প্রতি ডলারের বিপরীতে টাকার দর ৮৪ দশমিক চার টাকা।
এখন প্রতি ডলারের বিপরীতে টাকার দর ৮৪ দশমিক চার টাকা।

সার্চ ইঞ্জিন গুগল দেখাচ্ছে এখন প্রতি ডলারের বিপরীতে টাকার দর ৮৪ দশমিক চার টাকা। যদিও এটা দু-দশ পয়সা ওঠা নামা করছে। তবে সাড়ে তিরাশির ওপরেই থাকছে। নতুন বছরের শুরু থেকেই ডলারের দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী। দেশে সেটা কিনতে গেলে কোথাও কোথাও ৮৬ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। এই বাড়তি দামের সুযোগ নিচ্ছেন প্রবাসীরা। এখন স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অন্তত ৫০ শতাংশ হারে বেশি টাকা পাঠাচ্ছেন দেশে। ডলারের দামের সঙ্গে বছরের এই সময়টাতে ট্যাক্স রিটার্ন জমা থেকে প্রাপ্ত অর্থযোগও একটি বড় বিষয়। নিউইয়র্কের কয়েকটি মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য পাওয়া গেছে। ওজোন পার্কের বাসিন্দা রেহনুমা কামাল গত মাসে ঢাকায় টাকা পাঠিয়েছেন ডলার প্রতি ৮৩ দশমিক ২০ পয়সা করে। এক হাজার ডলার পাঠিয়ে ৬ মাস আগের চেয়ে প্রায় আড়াই হাজার টাকা বেশি পেয়েছেন বলে জানালেন। এই মাসেও অর্থ পাঠাবেন। আশা করছেন, ডলারের বিপরীতে টাকা যেন আরেকটু বেশি পান।

জ্যাকসন হাইটসের ডিজিটাল ওয়ানের স্বত্বাধিকারী ব্যবসায়ী জাকারিয়া মাসুদ জানিয়েছেন, তার প্রতিষ্ঠান এখন ডলার প্রতি ৮৩ দশমিক ৫৩ টাকা করে পৌঁছে দিচ্ছেন বাংলাদেশে। সমপরিমাণ টাকা দিচ্ছে রুপালী এক্সচেঞ্জ, যা বর্তমানে সানম্যান গ্লোবাল এক্সপ্রেস কর্প নামে পরিচিত। এই প্রতিষ্ঠানটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মাসুদ রানা জানিয়েছেন, ডলার প্রতি টাকা বেশি পাওয়া গেলে, নিউইয়র্ক থেকে ভিন্ন পথে বা হুন্ডির ওপর নির্ভরতা কমে যায় অনেকখানি। মানুষ তখন বৈধ পথে টাকা পাঠাতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এখন সেটাই হচ্ছে। মাসুদ রানা জানিয়েছে এখন দৈনিক গড়ে এক লাখ ২০ হাজার ডলার টাকা পাঠাচ্ছেন তাঁরা। এটা কোনো কোনো দিন দেড় লাখ ডলার ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

শুধু ডলারের দাম বেশি পাওয়া যাচ্ছে বলেই কি এই ঊর্ধ্বগতি, এমন প্রশ্নের উত্তরে মাসুদ রানা বলেন, বছরের এই সময়ে ট্যাক্স রিটার্ন থেকেও মানুষ বাড়তি পয়সা পায়। সারা বছরে অনেক পরিবার অপেক্ষা করে নতুন বছরে বাড়িতে কিছু টাকা পাঠানোর জন্য। আয়কর রিটার্ন সেই সুযোগ করে দেয়। সে কারণেও এখন ডলার বেশি বেশি পাঠাচ্ছেন অনেক প্রবাসী।

রেমিট্যান্স প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কথা বলে এবং অন্যান্য বিশ্লেষণ থেকে দেখা যাচ্ছে, টাকার দাম কমে যাচ্ছে মূলত ২০১৭ সালের মাঝামাঝি থেকে। ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ডলারপ্রতি টাকার দাম ৮০-র মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। এটা ৭৭ টাকার নিচেও ছিল দীর্ঘদিন। ২০১৭ সালের মাঝামাঝি থেকে এটা বাড়তে শুরু করে। তবে ২০১৮ সালের শুরু থেকেই এটা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। গত ৬ মাসে ডলার প্রতি টাকা বেড়েছে ৩ টাকার বেশি।

বেশি বেশি ডলার পাঠানোর পরিপ্রেক্ষিতে, দেশে বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিট্যান্স প্রবাহও বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। গত বছর অর্থমন্ত্রী এম এ মুহিত জানিয়েছিলেন, ২০১৬ সালে রেমিট্যান্স প্রবাহে যে মন্দা তৈরি হয়েছিল সেটা কাটিয়ে প্রায় ২০ ভাগ বেড়েছে বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণের হার। এর পরেও ঢাকায় স্থানীয়ভাবে ডলারের বাজারে কিছু অস্থিরতাও তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে।

সর্বশেষ আপডেট: ৩ মার্চ ২০১৮, ১৪:৫৭
ডেস্ক রিপোর্ট

পাঠকের মন্তব্য

সর্বশেষ আপডেট


বিনোদন