পতাকা বৈঠকে বিজিবিকে বিজিপি সেনাসমাবেশ টহলের অংশ, গুলির কথা অস্বীকার

নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের শূন্যরেখায় বিজিপির সঙ্গে পতাকা বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন ৩৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান।UNB
নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের শূন্যরেখায় বিজিপির সঙ্গে পতাকা বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন ৩৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ‘তুমব্রু সীমান্তে সেনাসমাবেশকে’ নিয়মিত টহলের অংশ বলে দাবি করেছে মিয়ানমার।

আজ শুক্রবার বিকেলে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের শূন্যরেখায় (মৈত্রী সেতু এলাকায়) বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) মধ্যে দেড় ঘণ্টাব্যাপী পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে বিজিবির প্রশ্নের জবাবে বিজিপির অধিনায়ক ওই দাবি করেন। বৈঠকে সীমান্তে দুই দফায় গুলি ছোড়ার ঘটনা অস্বীকার করে বিজিপি।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ঘুমধুম সীমান্তের শূন্যরেখার মৈত্রী সেতুসংলগ্ন পয়েন্টে (বাংলাদেশের ভেতরে) পতাকা বৈঠকটি শুরু হয়। চলে বিকেল পৌনে পাঁচটা পর্যন্ত। বৈঠকে পাঁচ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন কক্সবাজার ৩৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান। পাঁচ সদস্যের মিয়ানমার দলে নেতৃত্ব দেন দেশটির মংডু জেলার বিজিপি ১ নম্বর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক অং সো।

সূত্র জানায়, বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে সীমান্তে সেনাসমাবেশ ঘটিয়ে চলেছে মিয়ানমার। তা ছাড়া গুলিবর্ষণের ঘটনাও ঘটছে। এটা সীমান্ত আইনের পরিপন্থী। জবাবে মিয়ানমার প্রতিনিধিদলের নেতা বলেন, নিয়মিত টহলের অংশ হিসেবে সীমান্তে সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে। সীমান্তে মিয়ানমার নতুন করে কাঁটাতারের বেড়া দিচ্ছে। সংস্কার করছে সীমান্ত সড়ক। সেখানে পুলিশও আছে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই।

বৈঠকে মিয়ানমারের প্রতিনিধিদল গুলি ছোড়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, শূন্যরেখায় যেসব বাঙালি (রোহিঙ্গা) রয়েছে, তাদের মিয়ানমার ফিরিয়ে আনা হবে। তাদের ফিরে আসার জন্য সেখানে প্রচারণাও চলছে।

বৈঠক শেষে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে সীমান্তে ফাঁকা গুলি ছোড়ার কথা অস্বীকার করেছে বিজিপি। সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা সমাবেশের বিষয়টি নিয়মিত টহলের অংশ বলে দাবি করেছে তারা। বৈঠকে শূন্যরেখায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের আবারও তাঁদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু কখন তাদের ফেরত নেওয়া হবে তা নির্দিষ্ট করে জানায়নি বিজিপি।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান বলেন, ‘আমরা মিয়ানমারের কাছে সীমান্তে সেনাসমাবেশ এবং গুলি ছোড়ার ব্যাখ্যা দাবি করি। এ সময় তারা গুলি ছোড়ার কথা অস্বীকার করে। আর সেনাসমাবেশের বিষয়টি নিয়মিত টহলের অংশ বলে জানায়। এ ছাড়া নির্মাণাধীন সীমান্ত সড়ক এবং অভ্যন্তরীণ সড়কের কাজেও কিছু সেনা সীমান্তবর্তী এলাকায় নিয়োজিত রয়েছে বলে জানায় তারা।’

বিজিবি সূত্র জানায়, বৈঠকে দুই দেশের সীমান্তে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখাসহ সীমান্ত চোরাচালান বন্ধের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা নিয়েও আলোচনা করা হয়।

সর্বশেষ আপডেট: ২ মার্চ ২০১৮, ২০:২৪
প্রথম আলো

পাঠকের মন্তব্য

সর্বশেষ আপডেট


বিনোদন