কোনো এক ভালোবাসা দিবসে জন হর্গান প্রেয়সী এমিলিকে জিজ্ঞেস করলেন, কী চাই তোমার? উত্তর এল, মাজুনি—থালাবাসন ধোয়ার জন্য। খুশিমনে চমৎকার এক মাজুনি কিনে ঘরে ফিরলেন জন। এমিলি খুব প্রশংসা করলেন, খুব দরকার ছিল বললেন, কিন্তু মুখ রাখলেন থমথমে। জন হর্গান পেশায় বিজ্ঞান লেখক। মনের অলিগলি নিয়েও নিশ্চয় ভাবেন। অথচ সেদিন সবচেয়ে কাছের মানুষটির মনই তাঁর কাছে দুর্বোধ্য ঠেকল।
দিন কয়েক আগে জন হর্গান ‘সায়েন্টিফিক আমেরিকান’ ব্লগে লিখলেন, প্রযুক্তির সাহায্য নিলে হয়তো আজ এমিলির মন বুঝতে পারতেন। বর্তমান প্রযুক্তি দিয়েই যে তা সম্ভব, তা-ও ব্যাখ্যা করেছেন সেখানে। সে ব্যাখ্যা ছিল অনেকটা এমন:
আমরা একে অপরের সঙ্গে সংকেত বিনিময় করি। সেটা দৃশ্যমান হতে পারে, শ্রাব্য হতে পারে, স্পর্শের মাধ্যমে হতে পারে। তবে প্রত্যেকে বাস করি নিজ নিজ জগতে। পাশের মানুষটির মনে কী চলছে, তা বুঝতে পারি না। এতে সংকেতের ভুল ব্যাখ্যা করছি আমরা। ভ্যালেন্টাইন দিবসে উপহার দিচ্ছি মাজুনি। এমন সমস্যা হতো না যদি জন আর এমিলি ওয়াই-ফাইয়ের মাধ্যমে যুক্ত থাকতেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মস্তিষ্কে প্রতিস্থাপনযোগ্য চিপ বা ইমপ্ল্যান্টের সাহায্য নিতেন।
কীভাবে কাজ করবে ইমপ্ল্যান্ট? নির্দিষ্ট কাজের জন্য ইমপ্ল্যান্টগুলোর আলাদা আলাদা অ্যাপ থাকতে হবে। উপহার কেনার জন্য এমিলির মস্তিষ্কের ইমপ্ল্যান্টে সংকেত পাঠাবে সে অ্যাপ—এই ভালোবাসা দিবসে কী চায় সে। সংকেতের উত্তরে জনের অ্যাপ এমিলির জন্য অনলাইনে উপহার কেনার ফরমাশ দেবে কিংবা রেস্তোরাঁয় বুকিং দেবে। অন্য কোনো অ্যাপ হয়তো মস্তিষ্কের সিগন্যালে পরিবর্তন এনে একে অপরের প্রতি সদ্ভাব টিকিয়ে রাখবে। এ জন্য অবশ্য এমিলির মস্তিষ্কের ইমপ্ল্যান্ট থেকে তাঁকে না জানিয়ে সংকেত নেওয়ার পূর্বসম্মতি দরকার। কাছের মানুষের জন্য সেটুকু তো তিনি করতেই পারেন। আর এভাবেই প্রযুক্তি তাঁদের ভালোবাসা দিবসটা আরও আনন্দের করে তুলত বলে মনে করেন জন হর্গান। সূত্র: সায়েন্টিফিক আমেরিকান
পাঠকের মন্তব্য