দ্বিতীয় দিনটাও নিজেদের করে নিতে ইমরুল কায়েস-সাব্বির রহমানকে ৪ ওভার কাটিয়ে দিলেই হতো। ইমরুলের এই ধৈর্যটুকুও হয়নি। কী ভেবে যে ‘চায়নাম্যান বোলার’ লক্ষ্মণ সান্দাকানের গুগলিটা চালাতে গেলেন! ফল? এলবিডব্লু। ৩৪ রানে ইমরুল আউট হওয়ার পর শেষ বিকেলটা কোনোমতে কাটিয়ে দিতে পাঠানো হলো ‘নাইট ওয়াচম্যান’ তাইজুল ইসলামকে।
পরের বলে আবারও সান্দাকান ব্যবহার করলেন তাঁর ধারালো অস্ত্রটাই—গুগলি! তাইজুল সেটা পড়তে পারলে তো! সান্দাকানের হ্যাটট্রিক ঠেকানো গেলেও হাসিমুখে দিন শেষ করা হলো না বাংলাদেশের, ৫ উইকেটে তাদের রান ২১৪। ৬ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। শেষ বিকেলে সেই ভূতটা আবারও ভর করেছিল। সাকিব আল হাসানকেই মনে হলো সবচেয়ে ভূতে পাওয়া!
সৌম্য সরকার, ইমরুল, সাব্বির—অহেতুক উইকেট উপহার দিয়ে এলেন শ্রীলঙ্কান বোলারদের। স্থানীয় সময় ৪টা ৫৯ থেকে ৫টা ১০—শেষ বিকেলের এই ১১ মিনিটে নেই ৩ উইকেট! সাত বলের মধ্যেই এই যাওয়া-আসা।
অথচ বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। রঙ্গনা হেরাথের বলে ফিফটি থেকে মাত্র ১ রান দূরে থেকে তামিম ইকবাল এলবিডব্লু হওয়ার আগে বাংলাদেশ ওপেনিং জুটিতে তুলেছে ৯৫ রান।
তামিম ফিরলেও দ্বিতীয় উইকেটে সৌম্য-ইমরুল স্বচ্ছন্দেই এগোচ্ছিলেন। টানা তিন ইনিংসে ফিফটি তুলে নেন বাঁহাতি ওপেনার। তবে গলের মতো কলম্বোয় ইনিংসটা তিন অঙ্কে রূপ দিতে পারেননি, সান্দাকানের গুগলিতে সৌম্য আউট ৬১ রানে। ইমরুলের সঙ্গে তাঁর দ্বিতীয় উইকেট জুটি ভেঙেছে ৩৫ রান যোগ করে। তবুও ইমরুল-সাব্বির যেভাবে এগোচ্ছিলেন দিনটা নিজেদের করে নেওয়া মোটেও কঠিন ছিল না বাংলাদেশের। দুজনের তৃতীয় উইকেট জুটি যোগ করে ৬২ রান। তখনই সান্দাকানের ফাঁদে পা দিলেন ইমরুল। পরের বলে এলবিডব্লু তাইজুলও। সেই পথ ধরলেন সাব্বির। তাইজুল ছাড়া বাকিদের প্রত্যেককে কাঠগড়ায় তোলা যায়।
বাংলাদেশের আশা হয়ে আছেন সাকিব ও মুশফিকুর রহিম। কিন্তু ব্যাটিং বিপর্যয় আর টেস্ট মেজাজ ভুলে সাকিব যেভাবে টি-টোয়েন্টি ধাঁচে ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং শুরু করলেন তাতে স্বস্তির বদলে শঙ্কাটাই জাগল বেশি! ১১ রানে জীবন পাওয়া বাঁহাতি অলরাউন্ডার অপরাজিত ১৮ রানে, সেটিও ৮ বলে। মুশফিক ২ রানে। প্রতিপক্ষ বোলারকে হ্যাটট্রিকের মুখে রেখে সুইপ করাটা সাহস নাকি বোকামি—এ নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। কিন্তু ওই পরিস্থিতিতে প্রতিটা বলেই বেধড়ক ব্যাট চালানো সাকিব যেন বুঝিয়ে দিলেন, ‘আমি চলি আমার মতোই।’
পাঠকের মন্তব্য