ঝাঁকে ঝাঁকে ওরা। কারো কৈশোর কাটছে, কারো-বা তারুণ্য। প্রান্তিক উপকূলের কাঁদামাটি ঘেঁষে যাদের বেড়ে ওঠা। কেউ পড়ছে স্কুলে, কেউ কলেজ ছুঁয়েছে। সবাই এখন আলোর পথে ছুটছে, হচ্ছে তথ্যে সমৃদ্ধ। পরিবর্তনটা এসেছে আলোকযাত্রা’র ছোঁয়ায়! “আলোকযাত্রা” মূলত কী? কী আছে যার ছায়ায়? উপকূল পড়ুয়াদের জনপ্রিয় সৃজনশীল সংগঠন “আলোকযাত্রা”।
পিছিয়ে পড়া উপকূলের অনগ্রসর শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নিতে এর প্রয়াস অব্যাহত আছে। “লেখালেখি ও মত প্রকাশ, শুদ্ধ ভাষা চর্চা, সংস্কৃতি চর্চা, খেলাধুলা চর্চা, গাছের চারা লাগানো ও পরিচর্যা করা, তথ্য প্রযুক্তি চর্চা, বই পড়া ও জ্ঞান অন্বেষণ, পরিবেশ পাঠ ও প্রকৃতি দেখা, শিষ্টাচার শিক্ষা, বিজ্ঞান চর্চা, দিবস পালন, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ সচেতন, শিশু সুরক্ষা, পরিচ্ছন্নতা চর্চা, ইতিহাস অনুসন্ধান, গবেষণা/ তথ্য সংরক্ষণ” এসব দারুণ বিষয়গুলো নির্দিষ্ট সময়ে করে যাচ্ছে সংগঠনটি। গত বছর থেকে ভিন্ন পরিগ্রহে ব্যতিক্রমী ধারায় কাজ শুরু হলেও বহু আগ থেকে আলোকযাত্রা আলো ছড়াচ্ছে উপকূলে।
বর্তমানে উপকূলে দেড় শতাধিক স্কুলে নিয়মিত দেয়ালপত্রিকা “বেলাভূমি” প্রকাশ ও একটি পরিবেশ সচেতনতা বিষয়ক কর্মসূচি “সবুজ উপকূল”, উপকূল উন্নয়নে নিজেদের উদ্যোগে গাছ লাগানো, ঈদবস্ত্র ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ এসবই আলোকযাত্রা’র কাজের ফসল। রফিকুল ইসলাম মন্টু। বরগুনার এ কৃতি সন্তান বাংলাদেশের উপকূল সাংবাদিকতার পথিকৃত ও “উপকূল বন্ধু”। যিনি এ আলোকযাত্রা’র উদ্যোক্তা। খবরের খোঁজে ছুটেন উপকূল থেকে উপকূলে। উপকূলের যত আঁকা-বাঁকা পথ আছে সবই তার চেনা, সবই তার নখদর্পনে। প্রান্তিকের অন্ধকারকে তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় গণমাধ্যমে। এমন সৃজনশীল সংগঠনের পথচলা কীভাবে শুরু? আর কেনই-বা এ উদ্যোগ? পেছনের এমন গল্প জানতে চাইলে তিনি বলছিলেন, খবর সংগ্রহে আমি যখন উপকূলের কোন এক প্রান্তিকে কিংবা দ্বীপে যাই, তখন সেখানে তথ্যের শূণ্যতা অনুভব করি। এখানের স্কুল পড়ুয়া ছেলে- মেয়েরা শহরের ছেলে-মেয়েদের তুলনায় অনেক পিছিয়ে। তখন আমার মাথায় এলো ওদেরকে তথ্যে সমৃদ্ধ করার। যা দেয়ালপত্রিকা “বেলাভূমি” প্রকাশের মাধ্যমে শুরু হয়। মি. রফিকুল আরো বলছিলেন, সংগঠনের কাজের পরিধিতে নতুন কিছু যোগ হয়েছে। আরো বৃহৎ পরিসরে কাজ করার লক্ষ্যে এ বছর নতুন পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। যার সঙ্গে উপকূলজুড়ে অসংখ্য পড়ুয়া যুক্ত।
আলোকযাত্রা নিয়ে ভবিষ্যত স্বপ্ন সম্পর্কে জানতে চাইলে মি. রফিকুল বলছিলেন, আলোকযাত্রা’র সদস্যরা অন্যদের চেয়ে আলাদা। চারপাশের জগত সম্পর্কে ওরা এখন অনেকটা অভিজ্ঞ। যা তাদের জীবনকে সাফল্যের স্বর্ণ শিখরে পৌঁছে নিয়ে যাবে। আশারাখি, ওরাই উদ্যোগী হয়ে উপকূলকে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাবে।
পাঠকের মন্তব্য