শততম টেস্ট খেলতে শ্রীলংকার বিরুদ্ধে কলম্বোতে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ।
টেস্টের এই সেঞ্চুরি ম্যাচে বাংলাদেশ দল ভক্তদের কতটা সন্তুষ্ট করতে পারবে, তা নিয়ে আছে নানা বিশ্লেষণ।
কিন্তু আজ থেকে ১৬ বছর আগে ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ যখন প্রথম টেস্ট খেলেতে নেমেছিল, সেখান থেকে কতটা এগিয়েছে দল?
ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ এগিয়েছে সে কথা নি:সন্দেহে বলা যায়, তবে টেস্টের ক্ষেত্রে এ দাবি করাটা বেশ দুষ্কর।
কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের এ হাল কেন?
আগের ৯৯টি টেস্টে বাংলাদেশ দল জয় পেয়েছে মাত্র আটটি ম্যাচে, পরাজয় ৭৬টি এবং ড্র করেছে ১৫টিতে। বাংলাদেশ ছাড়া বাকি নয়টি টেস্ট খেলুড়ে দেশ তাদের প্রথম ৯৯টি টেস্টে এতো বেশি পরাজয়ের স্বাদ পায়নি।
ক্রিকেট ভাষ্যকার রকিবুল হাসান মনে করেন, টেস্টে বাংলাদেশ যে ভালো করতে পারছে না তার বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে।
প্রথমত, তিনি মনে করেন যে ২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর বাংলাদেশ খুব বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়নি।
বাংলাদেশের মাটিতে টেস্ট ম্যাচ খেলার জন্য বিদেশী দলগুলো খুব একটা আগ্রহী হয়নি। এর পাশাপাশি বিদেশের মাটিতে টেস্ট খেলার জন্যও তেমন একটা ডাক পায়নি বাংলাদেশ।
রকিবুল হাসানের বর্ণনায়, “টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ এখনো প্রথম ইনিংসের দল। যেকোন দলের বিপক্ষে তারা প্রথম ইনিংসে ভালো করে। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো করতে পারছে না।”
মি: হাসান মনে করেন, একটি দল যত বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলবে সে দল তত বেশি ভালো করার সুযোগ পাবে। কিন্তু বাংলাদেশ দলের সে সুযোগ হয়ে উঠেনি।
এর পাশাপাশি বাংলাদেশের ঘরোয়া প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে চারদিনের ম্যাচ চালু করতে দেরি করেছে বাংলাদেশ।
দীর্ঘ সময় এই আসরের খেলাগুলো তিনদিনের ম্যাচ হিসেবেই চালু ছিল, ফলে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের টেস্ট ম্যাচ খেলার মতো মানসিকতা পুরোপুরি গড়ে উঠেনি - বলছিলেন মি: হাসান।
আরেকজন ক্রীড়া ভাষ্যকার শামীম আশরাফ চৌধুরীও মনে করেন যে টেস্ট ম্যাচ খেলার জন্য বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের ‘ধৈর্যের অভাব’ রয়েছে।
এ সমস্যা দূর করতে দেশের ভেতরে বেশি করে চার-পাঁচ দিনের ম্যাচ আয়োজন করতে হবে বলে পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি।
মি: চৌধুরী মনে করেন, ঘরোয়া ক্রিকেটে অনূর্ধ্ব ১৬ বছরের ক্রিকেটারদের জন্য চার-পাঁচ দিনের ম্যাচ বেশি করে আয়োজন করতে হবে এবং এটা করা গেলে দীর্ঘ সময় ধরে খেলার মানসিকতা তৈরি হবে।
“যতদিন আপনি এটা না করবেন, ততদিন সাফল্যে ধারাবাহিকতা আসবে না। একটা জিতবে, পাঁচটা হারবে - এভাবেই চলবে। কারণ ব্যাকরণ না শিখলে তো আপনি রচনা লিখতে পারবেন না,” বলছিলেন মি: চৌধুরী।
তিনি এও মনে করেন যে ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের সফলতা আসার কারণে টেস্ট ক্রিকেটের দিকে খুব একটা মনোযোগ দেয়া হয়নি।
পাঠকের মন্তব্য