হাতিয়া দ্বীপের এক দল মেধাবী তরুণ, যারা প্রত্যেকে বুয়েট, কুয়েট, ঢাবি, জাবির মতো সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ছে। তারা হাতিয়া দ্বীপের শিক্ষা বিস্তারে গড়ে তুলছে ‘আলোকবর্তিকা’ নামে একটি সংগঠন।
২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে হাতিয়াতে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু এই ব্যতিক্রমধর্মী সংগঠনটি। উদ্দেশ্য হাতিয়ার শিক্ষার্থীদের আধুনিক শিক্ষা,বিভিন্ন ব্যতিক্রমী প্রতিযোগীতার সাথে পরিচিত করানো ও আয়োজন করা সর্বোপরি তাদেরকে বহুমুখী প্রতিভার অধীকারী হিসেবে গড়ে তোলা। সংগঠনের উদ্যোক্তারা জানান, হাতিয়া থেকে যাতে প্রতিবছর আরো বেশি শিক্ষার্থী দেশের পাবলিক ভার্সিটিগুলোতে চান্স পেতে পারে এজন্য তৃণমূল পর্যায় থেকেই তাদের গড়ে তোলা ও তাদের মাঝে সেই স্বপ্নের বীজ বুনে দেয়াই তাদের লক্ষ্য।
উপজেলা পরিষদ সহ সর্বস্তরের শিক্ষকদের সাপোর্ট তারা ইতিমধ্যেই তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে অর্জন করেছে। যেমন: চলতি বছর ১-৫ জানুয়ারী হয়ে গেল হাতিয়া ব্যাপী ভিজ্যুয়াল কুইজ প্রতিযোগিতা ২০১৮। এমন প্রতিযোগিতা হাতিয়াতে আগে হয়নি।অথচ ঢাকায় জাতীয় পর্যায়ে এটা প্রতিবছরই আয়োজন করা হয়।হাতিয়ার ১৬ টি মাধ্যমিক স্কুল এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।প্রতিযোগিতাটি দুই পর্বে হয়।প্রথম পর্ব শেষ হয় ৪ জানুয়ারী দুপুর ১ টা।আর প্রথম পর্বের সেরা ১৮ জনকে নিয়ে সাগরিয়া হাই স্কুলে দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হয় ৫ জানুয়ারী।১৮ জনের মধ্যে জুনিয়র ডিভিশনে(ষষ্ঠ-অষ্টম) ৯ জন এবং সিনিয়র ডিভিশনে(নবম-দশম) ৯ জন অংশগ্রহণ করে।দুইটা ডিভিশনের মধ্য আলাদা ভাবে লটারির মাধ্যমে ৩ টা গ্রুপ করা হয়।প্রতি গ্রুপে ৩ জন সদস্য।মোট ৬ টা গ্রুপ দুই ডিভিশন মিলে।দ্বিতীয় পর্বে ৬ টা রাউন্ড হয়।প্রতিটি রাউন্ডে ৫ টি করে প্রশ্ন করা হয়।রাউন্ড গুলো হলো বাংলাদেশ,আন্তর্জাতিক,মুক্তিযুদ্ধ,খেলাধুলা,তথ্য প্রযুক্তি এবং সবশেষে মনোযোগ রাউন্ড।প্রতিটি প্রশ্নেই মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরে একটি ছবি দেখানো হতো।ছবিটা সম্পর্কে কিছু তথ্য বলা হতো।এরপর ওই ছবি সম্পর্কিত একটা প্রশ্ন করা হতো।প্রথম পর্বের কোশ্চেন পেপারে মোট ১০ টা কোশ্চেন ছিল।সবগুলো প্রশ্নই মতামতধর্মী প্রশ্ন ছিলো।শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া গেছে।অনুষ্ঠানে উপস্থিত কয়েকজন শিক্ষক থেকে এই অফারও পাওয়া গেছে যে পরবর্তী বছর থেকে প্রত্যেকটা স্কুল ভিত্তিক আলাদা ভাবে এটা আয়োজন করলে স্কুল কর্তৃপক্ষ পুরো অনুষ্ঠানের অর্থায়ন করবে।এটা আলোকবর্তিকার জন্য অনেক বড় অর্জন।
এর আগে গত বছর সংগঠনের আনু্ষ্ঠানিক যাত্রার পর ৬ সেপ্টেম্বর আলোকবর্তিকার টিম সাগরিয়ার তিনটা স্কুল পরিদর্শন করে।সাগরিয়া হাই স্কুল,সাগরিয়া প্রাইমারি স্কুল এবং আল আমিন আইডিয়াল একাডেমি।এই তিন স্কুলের অষ্টম শ্রেণি ও৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সাথে তাদের সুবিধা অসুবিধা নিয়ে প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকদের উপস্থিতিতে খোলামেলা কথা বলা হয়।পড়ালেখার খোঁজ নেয়া হয় এবং তাৎক্ষণিক কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞাস করে সঠিক উত্তরদাতাদের পুরষ্কৃত করা হয়।এটা ছিল আলোকবর্তিকার প্রথম মাঠপর্যায়ে করা কাজ।এর পরেই দ্বিতীয় প্রোগ্রাম হিসেবে নতুন বছরের শুরুতেই আয়োজিত হয় ভিজ্যুয়াল কুইজের। সংগঠনের উদ্যোক্তারা জানান, আলোকবর্তিকা প্রতিবছর কিছু কমন অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।যেমন:ভিজ্যুয়াল কুইজ,বিতর্ক প্রতিযোগিতা,বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড,বিজ্ঞান মেলা,মগজ ধোলাই। যাতে শিক্ষার্থীরা শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়।
পাঠকের মন্তব্য