মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে তার কাজ। তিনি ছোটবেলায় চেয়েছিলেন হবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, শিক্ষার্থী হিসেবে ছিলেন প্রথম সারির। মানুষের জীবনের চিত্রপট যে কতভাবে বাঁক নিতে পারে তা বোঝা যায় তার গল্প শুনলে- নাম এস এম আহ্বাবুর রহমান (মুন্না)।
জন্ম নিয়েছেন সিলেটে, বাবা ছিলেন বাংলাদেশ ক্যামিকাল ইন্ড্রাস্টিজ কর্পোরেশনের চিফ একাউন্টস অফিসার। মা গৃহীনি। বাবার চাকুরীসূত্রে পড়েছেন তিনটি স্কুলে। প্রাতিষ্টানিক শিক্ষার তখনকার প্রথম ধাপ মাধ্যমিক শেষ করেন পলাশ সার কারখানা উচ্চ বিদ্যালয়, নরসিংদীতে। এরপর গল্পটা পরিবর্তন হয়েছে দ্রুত, এইচএসসি পাশ করেন তেজগাঁও কলেজ থেকে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক, নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মানবসম্পদ ব্যাবস্থাপনায় এমবিএ, ঢাবির সবুজ চত্বর থেকে এইচআরএমসি কোর্স করেন ঢাবির আইবিএর অধীনে।
যে কারণে তার গল্প আপনারা শুনছেন এবার সে বিষয়ে যাই, বাংলাদেশে মানবসম্পদ ব্যাবস্থাপকদের মধ্যে ক্যারিয়ারের দশবছরে সফলতার স্বীকৃতিস্বরুপ দেশের একটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তিনি ভূষিত হয়েছেন “এইচআর গুরু” হিসেবে, এছাড়া তিনি এদেশীয় জনপ্রিয় কনসালটেন্সী ফার্ম” এইচআর স্পিকস বাংলাদেশ” এর লিড কনসালটেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জনাব আহবাব কর্মজীবনের প্রথমে উইংস সেন্টার, এক্সিকিউটিভ অপারেশন, পলমল গ্রুপের এইচআরে, অলিম্পিক ইন্ডাস্টিজ লিঃ, সুপারস্টার গ্রুপে, মদিনা গ্রুপে হেড অব এইচ আর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এরপর এবছরের শুরুতে স্বনামধন্য বেসরকারী বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান “ডরিন পাওয়ার লিমিটেড” এর হেড অফ এইচআর হিসেবে যোগ দেন। তার ব্যাস্ততম কর্মজীবনে তিনি বরাবরই প্রাধাণ্য দিয়েছেন মানবসম্পদ উন্নয়নকে।
আমাদের সাথে কথোপকথনে জনাব আহ্বাব বলেন, “বাংলাদেশে এইচআর ফিল্ডে একটা পরিবর্তন বা আলোড়ন এসেছে ২০০০ পরবর্তী সময়ে। আগে বেশীরভাগ প্রতিষ্টানে এইচ আর ছিলোনা, বর্তমানে বহুজাতিক এবং এদেশীয় মোটামুটি সকল বড় কোম্পানী এইচআর বিভাগকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে থাকে। কর্মী অন্ত:প্রাণ হতে হয় মানবসম্পদ ব্যবস্থাপককে। ডরিন পাওয়ারে এসেছেন কারণ এটা একটা বুমিং সেক্টর, একটা সময় অনেক উপরে উঠবে আরো। ইন্জিনিয়ারদের সাথে কাজ করা হচ্ছে, তাদের উন্নয়নে কাজ করার সুযোগ থাকায় এককথায় চ্যালেন্জিং হচ্ছে পুরো ব্যাপারটাও। এইচআর স্পিকস নিয়ে কি স্বপ্ন দেখেন জানতে চাইলে আহবাব মুন্না বলেন, “আসলে অন্য ফার্মগুলোর মত শুধু ট্রেনিং করিয়ে শেষ এই থিমটাতে আমরা বিশ্বাস করিনা,ফ্রেশার্সদের ক্ষেত্রে শুধু ট্রেনিং দিয়ে নয়, তাকে জবমার্কেটে প্রবেশ করাতে সর্বোচ্চ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে তার পাশে থাকার চেষ্টা করি আমরা এইচআর স্পিকস বাংলাদেশ পরিবার।” শুধু তাই নয়, প্রফেশনালসদের ক্ষেত্রে যেভাবে ট্রেনিং দেয়া হয় তা নিজের কর্মক্ষেত্রে কিভাবে কাজে লাগানো যাবে, করতে গিয়ে কি কি বাঁধা আসবে, বাঁধাগুলো অতিক্রমের পদ্ধতি নিয়েও এইচআর স্পিকস পাশে থাকবে।
আমাদের নতুন বছরের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে, দেশের বিশটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে স্কিল ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে কথা বলা, আইডিয়া জানা এবং শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম তৈরী করা পুরো কমিউনিটিতে।” এছাড়া এইচআর স্পিকসের ট্রেনিং, হেড হান্টিং, স্কিল ডেভেলপমেন্ট সেবা তো রয়েছেই।
সদা হাস্যজ্জল আহ্বাব মুন্না বলেন, “এদেশীয় মানবসম্পদ ব্যাবস্থাপনায় আরো অনেক গুণগত পরিবর্তনের সুযোগ রয়েছে, আমরা সেসব বিষয় নিয়েও কাজ করতে চাই।” ভবিষৎটা স্বপ্নের সমান বড় করার দৃপ্ত শপথে তিনি এগিয়ে যেতে চান বলে জানালেন তিনি।
আহ্বাবুর রহমান পেশাগত সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে নিয়মিত কলাম লিখেন মানবসম্পদ উন্নয়নে এবং তরুণদের পেশাগত পরামর্শ দিয়ে দেশের বিভিন্ন পত্রিকায়, ম্যাগাজিনে। এছাড়া ব্যাক্তি জীবনে প্রচন্ড সামাজিক এই মানুষটি বিএসএইচআরএমের এসোসিয়েট মেম্বার,এনএসইউ ইএমবিএ ফোরামের এক্সিকিউটিভ মেম্বার, আইবিএ এমডিপি এলামনাই এসোসিয়েশনের মেম্বার হিসেবে যুক্ত রয়েছেন।
পাঠকের মন্তব্য