বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্মচাপের কারনে ভারী বর্ষণ ও অমাবশ্যার জোয়ারের পানির প্রভাবে বিপদ সীমার ৪১ সে.মি. ওপর দিয়ে বইছে জোয়ারের পানি। জোয়ারের চাপে বরগুনা সদরসহ তালতলী, বেতাগী ও পাথরঘাটা উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে ২০টি গ্রাম পৌর শহরসহ উপকূলের নিন্মাঞ্চল। ভাঙা বেরিবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে লবন পানিতে নষ্ট হচ্ছে ফসলী জমি। ভাসিয়ে নিয়ে গেছে মাছের ঘের।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিন্মচাপে প্রভাবে ভারী বর্ষণ ও জোয়ারের পানির চাপে ভেঙে গেছে বরগুনা সদর উপজেলার ডালভাঙা গ্রামের বেড়িবাঁধ , মোল্লার হোড়া, গোলবুনিয়া, মাছখালী ও পোটকাখালী আশ্রয়ন প্রকল্পের বিকল্প বেড়িবাধ ভেঙে আশ্রায়ন প্রকল্প প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও তালতলী উপজেলার তেতুলবাড়িয়া, জয়ালভাঙাসহ বিভিন্ন স্থানে বেরিবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন দেখা দিয়েছে বেতাগী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে। আর বেরিবাঁধে ভাঙনের কারনে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে এসব এলাকার ২০টি গ্রাম। বেরিবাধ ভাঙ্গনের কারনে এসকল গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত ভাটায় শুকায় আর জোয়ারে প্লাবিত হয়।
বরগুনা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট্্নিন্মচাপে ও অমাবশ্যার জোয়ারের পানি ৩ দশমিক ২৬ সে.মি. বেগে প্রবাহিত হচ্ছে, যা বিপদ সীমার ৪১ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও জেলা গত ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৬৭ মি.মি। বর্ষা মৌসুমে অমাবস্যা আর পূর্ণিমা তিথির জোয়ারের পানি ভাসিয়ে নিয়ে যায় হতদরিদ্র এই মানুষদের সাজানো গোছানো সংসার। কোনভাবেই কাটিয়ে উঠতে পারেনা জোয়ারের পানির ক্ষয়-ক্ষতির প্রভাব। হঠাৎ করে ভারী বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে উপকূলীয় জীবন যাত্রা।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দাবী, ভাঙা বেড়িবাঁধগুলো মেরামতের ব্যাপাওে সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার ধরন্যা দিলেও তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। তাই বরগুনার জেলা প্রশাসক ও ইউএনও মহোদয়ের কাছে জনসাধারনের দাবী দ্রুত এই মানুষগুলোকে রক্ষা করতে ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়।
বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডেল উপ-বিভাগী প্রধান আবদুল হান্নান প্রধান জানান, বরগুনায় ৯শ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে বিভিন্ন দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ ৫ কিলোমিটার বেরিবাঁধ এখনো ক্ষতিগস্থ অবস্থায় রয়েছে। এছাড়াও নি¤œচাপের প্রভাবে বরগুনার তালতলী উপজেলার তেতুলবাড়িয়াসহ কিছু স্থানে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে শীঘ্রই এসব বেড়িবাঁধ মেরামত করা হবে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিন্মচাপের কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ু চাপের তারতম্যেও আধিক্য বিরাজ করছে। এতে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরী অব্যাহত রয়েছে। সাগর উত্তাল রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
পাঠকের মন্তব্য