ক্রিকেট নিয়ে পরীক্ষা চলছেই৷ সবশেষ সংযুক্তি মাঠ থেকে খেলোয়াড়কে বহিষ্কারের ক্ষমতা৷ নিয়ম ঠিক হয়েছে আগেই৷ ১ অক্টোবর থেকে চালু হওয়ার কথা থাকলেও তিন দিন আগে বাংলাদেশ-সাউথ আফ্রিকা সিরিজ থেকেই চালু হতে পারে নতুন নিয়ম৷
ক্রিকেটের ইতিহাসে বারবারই নিয়মে এসেছে পরিবর্তন৷ কখনও কখনও খেলোয়াড়েদের অদ্ভুত কর্মকাণ্ডে নিয়ম পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে ক্রিকেট সংস্থা৷ আবার কখনও খেলাকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে নেয়া হয়েছে নতুন ব্যবস্থা৷
এ বছরেরই জুন মাসে আইসিসির সভায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনার বিষয়ে একমত হয় সদস্য রাষ্ট্রগুলো৷ কথা ছিল, ১ অক্টোবর থেকে চালু হবে এ সব নিয়ম৷ কিন্তু এবার তিন দিন এগিয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর সাউথ আফ্রিকার সাথে বাংলাদেশের টেস্ট ম্যাচ দিয়েই তা চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে৷
খেলোয়াড় বহিষ্কার
পচেফস্ট্রুমে ২৮ সেপ্টেম্বরের টেস্ট ম্যাচ দিয়ে শুরু বাংলাদেশের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর৷ সফরে এটি ছাড়াও আরো একটি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে এবং দু’টি টি-টোয়েন্টি খেলা হবে৷ কিন্তু সম্ভবত ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে বেশি আগ্রহ থাকবে প্রথম টেস্ট ঘিরেই৷
খেলার অর্থে মাঠের লড়াই নয়, আক্ষরিক অর্থেও হয়ত লড়াই দেখতে চাইবেন অনেকে৷ কারণ? কে হবেন ক্রিকেট ইতিহাসে ‘লাল কার্ড’ পাওয়া প্রথম ব্যক্তি!
ফুটবলের মতো আক্ষরিক অর্থে অবশ্য কাউকে লাল কার্ড দেখানো হবে না৷ কিন্তু মাঠে কোনো খেলোয়াড় গুরুতর অসদাচরণ করলে তাঁকে সাময়িক বা পুরো ম্যাচের জন্যই বাইরে বের করে দিতে পারবেন আম্পায়ার৷ অন্য সব শাস্তি আইসিসির ‘কোড অফ কন্ডাক্ট’ অনুযায়ীই দেয়া যাবে৷
ইতিহাসের অংশ কে না হতে চায়? কিন্তু এমন ইতিহাসে প্রথম হিসেবে নিজের নাম ঢোকাতে চাইবেন এমন ব্যক্তি হয়তো খুঁজে পাওয়া কঠিনই হবে৷
রান আউট
ক্রিজের লাইনের ভেতরে ব্যাটসম্যানের শরীর বা ব্যাটের কোনো অংশ মাটিতে লেগে থাকতে হবে৷ এতদিন এই ছিল নিয়ম৷ এমনকি পুরো শরীর ক্রিজ লাইনের ভেতরে থাকলেও, কোনো অংশ যদি মাটিতে না থেকে ভাসতে থাকে, তাহলেও ছিল রান আউট দেয়ার বিধান৷
কিন্তু নতুন নিয়ম কিছুটা স্বস্তি নিয়ে আসছে ব্যাটসম্যানদের জন্য৷ এখন থেকে কোনোভাবে ক্রিজের ভেতরে ঢুকতে পারলেই হলো৷ মাটিতে না থেকে আকাশে ভাসলেও আর আউট হবেন না ব্যাটসম্যানরা৷
রিভিউ ব্যবস্থা
এতদিন দু’টো করে রিভিউ নিতে পারতো এক একটি দল৷ তবে রিভিউ অসফল হলে কোটা থেকে বাদ পড়তো একটি রিভিউ৷ কিন্তু প্রযুক্তি কখনই ‘আউট’ বা ‘নট আউট’-এর ক্ষেত্রে শতভাগ সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে পারে না, বিশেষ করে লেগ বিফোর উইকেট বা এলবিডাব্লিউ-এর ক্ষেত্রে৷
আইসিসি চিন্তা করছে, যেখানে প্রযুক্তিই নিশ্চয়তা দিতে পারছে না, সেখানে তার দায় কোনো দলের ওপর চাপানোর মানে হয় না৷ ফলে এখন থেকে আম্পায়ার্স কলে আউটের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে অসফল হলেও তার দলের রিভিউ কমবে না৷
তবে টেস্টে ৮০ ওভার পর পর যে নতুন রিভিউ যোগ হওয়ার বিধান ছিল, বাদ দেয়া হয়েছে সে সুযোগ৷ এখন থেকে টি-টোয়েন্টিতেও থাকবে রিভিউয়ের সুযোগ৷ পাশাপাশি সব আন্তর্জাতিক ম্যাচে ‘বল ট্র্যাকিং’ এবং ‘এজ ডিটেকশন’ প্রযুক্তির ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে৷
ব্যাটের আকারে পরিবর্তন
আইসিসির কাছে বেশ কিছু অভিযোগ এসেছিল৷ অনেক ব্যাটসম্যানই পুরু ব্যাট নিয়ে ব্যাট করতে নামছেন৷ পুরু ব্যাটের চেয়ে পাতলা ব্যাটের কানায় বল লেগে আউট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি৷ বড় শট খেলার সুবিধাও পাতলা ব্যাটের চেয়ে পুরু ব্যাটে অনেক বেশি৷
ফলে এখন থেকে নির্ধারিত পুরুত্বের ব্যাটেই খেলতে হবে ব্যাটসম্যানদের৷ ব্যাট ১০৮ মিলিমিটারের চেয়ে চওড়া, ৬৭ মিলিমিটারের চেয়ে মোটা এবং ব্যাটের কানা ৪০ মিলিমিটারের চেয়ে বেশি পুরু হতে পারবে না৷
এডিকে/ডিজি (আইসিসি)
পাঠকের মন্তব্য