রোহিঙ্গাদের বাঁচাও, বিশ্ববিবেক জাগাও

রোহিঙ্গাদের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবিতে বামপন্থি দলগুলোর আহ্বানে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ-সমাবেশে।
রোহিঙ্গাদের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবিতে বামপন্থি দলগুলোর আহ্বানে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ-সমাবেশে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার নেতৃবৃন্দ মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরোচিত হামলা, নির্যাতন, ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের বাঁচাতে বিশ্ববিবেক জাগিয়ে তুলতে হবে। রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে বিশ্বজনমত গড়ে তুলতে হবে।

রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধ ও রোহিঙ্গাদের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবিতে বামপন্থি দলগুলোর আহ্বানে আজ ১০ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ-সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এ আহ্বান জানান। সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক কমরেড মো. শাহ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কমরেড আকবর খান, বাসদ-এর কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক কমরেড জোনায়েদ সাকি, বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড আব্দুস সাত্তার, সিপিবি’র সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, বাসদ-এর কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক কমরেড হামিদুল হক প্রমুখ। সমাবেশটি পরিচালনা করেন ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড নজরুল ইসলাম।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর যেভাবে নির্যাতন হচ্ছে, তা সাম্প্রতিক সময়ের সকল সহিংসতাকে ছাড়িয়ে গেছে। রাজনৈতিক বিশেষ করে ভূ-রাজনৈতিক কারণে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা চলছে। বহুজাতিক কোম্পানির স্বার্থের আঘাত পড়েছে রোহিঙ্গাদের ওপর। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নানা শক্তি তাদের সংকীর্ণ অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থে বর্তমান পরিস্থিতিকে কাজে লাগাতে তৎপর হয়ে উঠেছে। মানবিক করণীয়ের বোঝার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ষড়যন্ত্রের বিপজ্জনক অভিঘাত সবটাই এসে পড়েছে বাংলাদেশের ওপর। জঙ্গি সন্ত্রাসবাদীরাও সুযোগ নিচ্ছে।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবিলার জন্য যা যা করা দরকার, বাংলাদেশ সরকারের তার সবটাই করা প্রয়োজন। এই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রয়োজন সমস্ত জনগণের ঐক্য গড়ে তোলা। জনগণের ঐক্যকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরাও প্রয়োজন। কিন্তু এ ব্যাপারে সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই। উপরন্তু সরকারের কিছু কিছু বক্তব্য প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক তৎপরতার ক্ষেত্রে সরকারের চরম ব্যর্থতা দেশবাসীকে চরম হতাশ করেছে।
জাতিসংঘের নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, জাতিসংঘের নিষ্ক্রিয়তা মেনে নেয়া যায় না। মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে হবে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক-এ সত্যকে মেনে নিয়ে জাতিসংঘের উদ্যোগে কফি আনানের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এই সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আশ্রয়গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের নাম নিবন্ধন করতে হবে এবং তাদেরকে গ্রহণ করতে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ গ্রহণ করতে বিশ্বজনমত সৃষ্টি করতে হবে।

রোহিঙ্গা সমস্যাকে মূলধন করে সাম্প্রদায়িক শক্তি ও দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকালী শক্তি যাতে অশুভ অভিসন্ধি কার্যকর করতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য দেশবাসীর প্রতি নেতৃবৃন্দ আহ্বান জানান। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুরনো পল্টনে এসে শেষ হয়।

সর্বশেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২২:২০
ছাইফুল ইসলাম মাছুম
ষ্টাফ করেসপন্ডেন্ট

পাঠকের মন্তব্য

সর্বশেষ আপডেট


বিনোদন