নব দিগন্তে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ

লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে।
লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে।
অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মাইন উদ্দিন পাঠান একুশ শতকে বলেন, “শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন দেখতে হবে আকাশ চুম্বী, কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এবং স্বপ্ন পূরণে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এতেই একজন শিক্ষার্থী জীবনকে স্বার্থক করে গড়ে তুলতে পারবে। কলেজের সার্বিক উন্নয়নকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আমার প্রচেষ্টা সব সময় অব্যাহত থাকবে।”

প্রকৃতির মনোরম দৃশ্যে ঘেরা ক্যাম্পাস লক্ষ্মীপুর জেলার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ। চার’টি বহুতল ভবন, দু’টি মসজিদ এবং দু’টি ছাত্রাবাস/ ছাত্রীবাস নিয়ে গঠিত কলেজ ক্যাম্পাসটি। মূল ক্যাম্পাসের সামনে বিশাল আকৃতির মাঠ ও আকাশে উঁকি দেওয়া ঝাউ গাছ আর সবুজ ছাঁয়া সৃষ্টি করা ফাম ওয়েল গাছের ছোঁয়ায় মনোরম এক অভাবনীয় দৃশ্য চোখে পড়ার মতো।

গত বছরের ২৮ডিসেম্বরে ৩২নং ক্রমিকে কলেজটির অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন প্রবীণ সাংবাদিক ও বিশিষ্ট সাহিত্যক প্রফেসর মোঃ মাইন উদ্দিন পাঠান। এরপর থেকে কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতরেও চোখে পড়ছে অন্যরকম কার্যক্রম। যথাযথ মর্যাদায় রাষ্ট্রীয় নানান দিবস উদ্যাপন, কলেজের বন্ধ থাকা অনুষ্ঠানগুলোর পুনরায় চালু, গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোর নতুনভাবে সংস্কার কাজ, ক্যাম্পাসের সাহিত্যঙ্গনকে অন্য দিগন্তে এগিয়ে নেওয়া, ইট-সিমেন্ট, টাইলস ও ইলেক্ট্রিক সংযোগের আড়ালে ফুলের বাগান সৃষ্টি, নতুন সবুজ রোপণ, মাসিক ক্লাস টেষ্টের ব্যবস্থা, পরীক্ষায় ভালো ফলাফলে পুরষ্কার আর ফলাফল বিপর্যয় হলে জবাবদিহিতা চালু, ওয়াশ ব্লকগুলোর সংস্কার, বৈদ্যুতিক পাখা ও কম্পিউটার ল্যাবের কম্পিউটারগুলোর মেরামত, দৈনিকপত্রিকা ও বই পড়ার নতুন পদ্ধতি কলেজের শিক্ষাক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের সূচনা। ১৬টি সিসি ক্যামেরায় পুরো ক্যাম্পাসের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথারীতি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বিদ্যামান রয়েছে।

এছাড়াও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করণে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালুর কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। এটি এখন জেলার মেধাবী শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে প্রিয় শিক্ষাঙ্গনও বলা যেতে পারে। প্রতি বছর জেলার সবচেয়ে ভালো ফলাফল অর্জন করা শিক্ষার্থীদেরকেই এখানে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়া হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষের উপস্থিতি নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া দেখে নয়, কলেজের শিক্ষার পরিবেশের আগের চেয়ে আমূল পরিবর্তনে শিক্ষার্থীরাই এখন নিয়মিত কলেজে আসে এবং উপস্থিতির হার ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। কলেজের এই আমূল পরিবর্তনে সচেতন অভিভাবক মহলে বেশ ইতিবাচক আলোচনাও নজর পড়ছে।

লক্ষ্মীপুরের যে কোন প্রান্তে গেলে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থীদের দেখা মিলে। তাদেরই একজন জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থীর সাফল্য স্মারক
অর্জন করা আনসার উদ্দিন মনির। তিনি এবার এইচএসসি পরীক্ষায়  জিপিএ ৫ পেয়েছেন। কলেজ সম্পর্কে অনুভূতি জানতে চাইলে মনির বলেন, “সত্যিই প্রিন্সিপাল স্যার এক দূর দৃষ্টি সম্পন্ন এক সৃজনশীল মনস্ক ব্যক্তিত্ব। যিনি নিজ স্বার্থের প্রতি খেয়াল না রেখে কলেজের শিক্ষার মান্নোয়নে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকেন। কলেজে এখন শিক্ষার পরিবেশ ফিরে এসেছে।”

কলেজ ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে পরিদর্শন করলে চোখে পড়ে, বিভিন্ন ধরণের অনুষ্ঠান যেমনঃ- জাতীয় দিবস পালন, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা,ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন, বিদায় ও নবীন বরণ, নববর্ষ উদ্যাপন, শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহণে সচেতনতামূলক কার্যক্রম,  রোভার স্কাউট. রেড় ক্রিসেন্ট ও বিএনসিসি’র সদস্যদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম, কলেজ কর্তৃপক্ষের ক্যাম্পাস প্রকাশনা বের করা এবং কলেজ পড়ুয়াদের বেলাভূমি ও প্রগতির মতো দেয়ালপত্রিকার প্রকাশনার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। কলেজটির রয়েছে বহু অর্জন। যার মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করে অর্জন করা অসংখ্য পুরস্কারও রয়েছে।

অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মাইন  উদ্দিন পাঠান একুশ শতকে বলেন, “শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন দেখতে হবে আকাশ চুম্বী, কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এবং স্বপ্ন পূরণে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এতেই একজন শিক্ষার্থী জীবনকে স্বার্থক করে গড়ে তুলতে পারবে। কলেজের সার্বিক উন্নয়নকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আমার প্রচেষ্টা সব সময় অব্যাহত থাকবে। তিনি আরো বলেন, মেধাবী ও সৃজনশীল পড়ুয়াদের পাশে আমরা সব সময় আছি এবং তাদের এগিয়ে নিতে কলেজের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে।”
প্রসঙ্গত, মরহুম মুহাম্মদ আবদুল জব্বার ১৯৬৪ সালের ১লা জুলাই প্রতিষ্ঠা করেন। যার জাতীয়করণ হয় ১৯৮০সালের ১লা মার্চ।

সর্বশেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৭, ২৩:৪৯
জুনাইদ আল হাবিব
কমলনগর প্রতিনিধি

পাঠকের মন্তব্য

সর্বশেষ আপডেট


বিনোদন