গুলশানের নতুন ঠিকানায় হোলি আর্টিজান

কেমন চলছে হোলি আর্টিজান? রেস্তোরাঁটির একজন কর্মী এককথায় উত্তর দিলেন—‘ভালো’।

স্লো, বিউটিফুল অ্যান্ড প্রিসাইজ—স্বাভাবিক, সুন্দর ও ঠিকঠাক। বাইরের সাইনবোর্ডে ‘হোলি’র সঙ্গে ইংরেজিতে তিনটি শব্দ লেখা। হ্যাঁ, এখন সবকিছুই স্বাভাবিক ও ঠিকঠাক আছে। পেছনের সেই ভয়াল স্মৃতিও কেউ মনে করতে চান না। চলছেও সুন্দরভাবেই।

গুলশান নর্থ অ্যাভিনিউর র‍্যাংগস আর্কেডের দোতলায় গরমেট বাজারের এক অংশে চলছে হোলি আর্টিজান বেকারি। পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর গত জানুয়ারিতে ৫০০ বর্গফুটের জায়গায় চালু হওয়া এ রেস্তোরাঁটির নাম সবারই জানা।

আজ রোববার দুপুরে দেখা যায়, র‍্যাংগস আর্কেড ভবনের নিচতলায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য বসে আছেন। হোলি আর্টিজানের নতুন এ রেস্তোরাঁটি শান্ত-ছিমছাম। কয়েকজন ক্রেতা পছন্দের খাবার কিনছেন। হরেক পদের খাবার সাজিয়ে রাখা। পাশেই বসার জন্য চেয়ার-টেবিল সাজানো।

কেমন চলছে হোলি আর্টিজান? রেস্তোরাঁটির একজন কর্মী এককথায় উত্তর দিলেন—‘ভালো’। গতকাল ছিল ১ জুলাই। লোকজনের আনাগোনা নিয়ে পাশ থেকে আরেক কর্মী বললেন, গতকাল দুপুরের পর থেকে বেশ ভিড় হয়। অনেকেই এসেছিলেন, ওই দিনের কথা মনে করে। তিনি বললেন, ‘আমাদের এক কাস্টমার এসেই বলেছেন, তিনি আমাদের দেখতে এসেছেন।’

নানা রকমের ব্রেড, কেক, পেস্ট্রি, কফি, আইসক্রিম, জুস, স্যান্ডউইচ, সালাদসহ নানান ধরনের খাবার পাওয়া যাচ্ছে। তবে ব্রেডের চাহিদাই বেশি। সকাল আটটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত খোলা থাকে। আটজন কাজ করছেন এখন। সবাই পুরোনো কর্মী। রেস্তোরাঁর বাইরে আর কোনো কথা বলতে নারাজ তাঁরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তেই একজন বলেন, ‘ওসব কথা মনে করতে চাই না।’

সবুজ লনসহ বেশ বড় জায়গাজুড়েই একসময় হোলি আর্টিজান বেকারি ছিল। বিদেশি নাগরিকদেরও পছন্দের জায়গা ছিল এটি। কিন্তু গুলশান-২ নম্বরের ৭৯ নম্বর সড়কের ৫ নম্বরের এই বাড়িটিতে গত বছরের ১ জুলাই এক জঙ্গি হামলায় পুরো দেশ স্তম্ভিত হয়ে যায়। জঙ্গিরা সশস্ত্র হামলা চালিয়ে দেশি-বিদেশি নাগরিকসহ মোট ২২ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে পাঁচ হামলাকারী জঙ্গিসহ ছয়জন নিহত হন।

গত বছরের ১৩ নভেম্বর পুলিশ বাড়িটির মালিকের কাছে এর দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়। তবে মালিকপক্ষ জানায়, ভবনটিতে তারা কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান করবে না। দোতলা ওই ভবন নিজেদের বাসস্থান হিসেবে গড়ে তুলবে তারা। সে জন্য এখন চলছে মেরামতের কাজ। ক্রেতাদের কথা চিন্তা করে হোলি আর্টিজান এখন চলছে অন্য ঠিকানায়। কর্মীরাও সবকিছু ভুলে এই রেস্তোরাঁ নিয়েই ব্যস্ত থাকতে চান।

সর্বশেষ আপডেট: ৩ জুলাই ২০১৭, ০২:২১
প্রথম আলো

পাঠকের মন্তব্য

সর্বশেষ আপডেট


বিনোদন