লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের চর মার্টিনের ৭নং ওয়ার্ডের মরহুম আবু ছায়েদ চেয়ারম্যান সড়ক ও বশির উল্লাহ সড়কের সংযোগ স্থল বাতিরখালের উপর জেলা ছাত্রলীগের এক নেতার উদ্যোগে নির্মাণ করা হয়েছে একটি কাঠের সেতু।
লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সাধারণ সম্পাদক মাইনউদ্দিন মাইন কাঠের সেতু তৈরি উদ্যোগ নিয়ে সমাজের বিত্তবান ও প্রবাসীদের সহযোগিতা নিয়ে ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ে কাঠের সেতুটি নির্মাণ করেন। এতে প্রতিদিন গ্রাম ও দূর থেকে যাতায়াত করা মানুষ, স্থানীয় স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা এর সুফল ভোগ করছেন।
এখানে আগে ছিলো একটি ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো। যা দিয়ে গ্রামের মানুষ, কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা জীবনের সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে আতংকে চলাচল করতো। নির্মিত কাঠের সেতুটি সংলগ্ন পশ্চিম চর মার্টিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ চর মার্টিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং দু’টি জামে মসজিদ। এছাড়াও এর কিছু দূর অবস্থিত ইউনিয়নের প্রাণকেন্দ্র মুন্সিগঞ্জ বাজার, মুন্সিগঞ্জ সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা, মার্টিন উচ্চ বিদ্যালয়, একটু দক্ষিণে চৌধুরী বাজার ও চৌধুরী বাজার উচ্চ বিদ্যালয় অবস্থিত। মোট কথায় গ্রামের বহু শিক্ষার্থী ও হাজার হাজার মানুষের যাতায়াতের সহজ মাধ্যম কাঠের সেতুটি। যৌথ সহযোগিতায় কাঠের সেতুটি নির্মাণে এই পিছিয়ে থাকা এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থার এক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। কিন্তু মানুষের মূল স্বপ্নটি এখনো পূরণ হয়নি।
যেই সময় সাঁকোটি খুবই বিপজ্জনক ছিলো, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতো হাজার হাজার মানুষ, স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। বহু আগ থেকেই সরকারিভাবে একটি সেতু নির্মাণের দাবি করলেও তা এলাকাবাসীর ভাগ্যে মিলেনি। এখন এলাকাবাসী নিজেদের ভোগান্তি নিরসনে একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করেছেন। কিন্তু কাঠের সেতুটি কোন প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয়নি এবং যার কোন মেয়াদ নেই। প্রয়োজন সরকারিভাবে প্রকল্প বরাদ্ধে একটি
ইট-পাথরের সেতু। যার নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকবে, মানুষ, শিক্ষার্থী ও যানবাহন চলবে। সুফল ভোগ করবে এলাকাবাসী।
স্থানীয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে মার্টিন উচ্চ বিদ্যালয়ের মোঃ পারভেজ আলম পিরন বলেন, ‘আগে কাছের স্কুলটিতে যেতে হলে অনেক দূর যেতে হতো এবং অনেক দূর দিয়ে ঘুরে বাড়িতে আসতে হতো। কাঠের সেতুটি স্থাপনের পর এখন অবস্থার কিছু পালাবদল হয়েছে।
স্থানীয় বাইতুস সালাম জল্লাদ জামে মসজিদের সভাপতি কামাল হোসেন মাঝি (৪৫) বলেন, ‘এলাকার মানুষের সহযোগিতায় কাঠের সেতুর মতো উন্নয়নমূলক উদ্যোগটিকে যুগান্তকারী বলা যেতে পারে। কিন্তু আমরা দীর্ঘ দিন ধরে সেতু নির্মাণের যে দাবিটি করে আসছি, তার আশানুরুপ ফলাফল আসছে না।’
এ বিষয়ে কাঠের সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগকারী জেলা ছাত্রলীগ নেতা মাইনউদ্দিন মাইন বলেন, ‘এলাকার বিত্তশালী, প্রবাসী ও নিজের থেকে কিছু টাকা দিয়ে কাঠের সেতুটি স্থাপন করতে সক্ষম হয়ে। কেউ এক হাজার, কেউ দুই হাজার, কেউ তিন হাজার এভাবে সবার থেকে ২৫হাজার টাকা সংগ্রহ করে মাটি দিয়ে বাতিরখালের ঐ অংশটি ভরাট করে, কাঠ কিনে মিস্ত্রীর মাধ্যমে কাঠের সেতুটি নির্মাণ হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখান দিয়ে এখন হাজার হাজার জনগণ চলাচল করে, ষ্কুল-মাদ্রাসার অসংখ্য ছেলে-মেয়েরা আলোকিত হওয়ার জন্য শিখতে যায়। এতে এখানে একটি ব্রীজ স্থাপন জরুরী হয়ে পড়ছে, যা এই এলাকায় বসাবসরত হাজারো মানুষের প্রাণের দাবি। এজন্য সরকারিভাবে এখানে একটি
ব্রীজ নির্মাণের দাবি জানাই।’
পাঠকের মন্তব্য